০৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে সরকারি জমি বেদখল, বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে উন্নয়ন কাজ

মুঃ মুজিবুর রহমান, বাউফল, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফলের ধুলিয়া ইউনিয়নের ধুলিয়া বাজার এলাকায় সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর, মাছের ঘের ও মুরগির খামার করেছেন স্থানীয় ক্ষমতাসিন ও বিরাধী দলীয় প্রভাবশালীরা। ভূমি অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপণা তুলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবাসা-বাণিজ্য করে আসছেন তারা। এদিকে জমির অভাবে বাজার সম্প্রসারণ প্রকল্প ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আটকে পড়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর দেখছি-করছি বলে সময় ক্ষেপণ করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, গত ২৬ জুন ওই সরকারি জমি উদ্ধারের জন্য লাল নিশান টাঙিয়ে দেওয়া হলেও প্রশাসন নিরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যাক্তি ও সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ধুলিয়া ইউনিয়নের ঘুরচাকাঠী মৌজায় সরকারি খাস খতিয়ানের ১০/১৫৮৭ দাগে ২.৭০ একর জমি রয়েছে। যার মধ্যে ধুলিয়া বাজার এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ জমি খাস রয়েছে। এসব জমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় প্রভাবশালীরা দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে। ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি জমিতে পাকা দোকান ঘর, মুরগির খামার ও মাছের ঘের করেছেন ওই প্রভাবশালীরা। সম্প্রতি স্থানীয় এমপি ধুলিয়া বাজার সম্প্রসারণের জন্য বরাদ্দ দিলেও সরকারি জমি বেদখল থাকায় বাজার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা। ধুলিয়া বাজারের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে সরকারি জমিতে ২০ থেকে ২২টি পাকা ও আধা পাকা ঘর রয়েছে। এসব দোকানঘর অন্যজনের কাছে ভাড়াও দিয়েছেন দখলদাররা। দোকান ঘরের পিছনের ডোবা-নালায় মুরগির খামার ও মাছের ঘের করা হয়েছে। সরকারি জমিতে এসব দোকান ঘরের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মিয়ার ৪টি, সজল ওঝার ৩টি, সুশান্ত ওঝার ২টি, ইউনিয়ন যুবদল নেতা নাসির উদ্দিনের ১টি ও মিজান হাওলাদারের দখলে ২টি ঘর রয়েছে।

বাজার উন্নয়নের স্বার্থে সরকারি ওই জমি ছেড়ে দিতে বারবার বলা হলেও দখলদাররা জমি ছাড়ছেন না। সর্বশেষ গত ২৬ জুন স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশান টাঙিয়ে দেন। কিন্তু জমি উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, সরকারি জমি দখল করে স্থাপণা করেছেন প্রভাবশালীরা। তারা নিয়মিত ভূমি অফিসে টাকা দিয়ে জমি দখলে রাখছেন।

এবিষয়ে ধুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মু. হুমায়ন কবির জানান, বাজার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি জমি বেদখল থাকায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলছেন।

দখলদারদের কাছে ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ধুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম খান বলেন, প্রাথমিক ভাবে খাস জমির সীমানা নির্ধারণ করে সেই জমিতে লাল নিশান টাঙিয়ে জমি দখলে নেওয়া হয়েছে। অবৈধ স্থাপণা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন।

বাউফল উপজেলা সহাকরী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক কুমার কুন্ডু বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে আমরাও জড়িত। সরকারি জমি খালি করতে বলা হয়েছে। যদি স্ব-ইচ্ছায় চলে না যান, তাহলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে ৩,৫৭০ কেজি জাটকা জব্দ; দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ

error: Content is protected !!

বাউফলে সরকারি জমি বেদখল, বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে উন্নয়ন কাজ

আপডেট সময়: ০১:০৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

মুঃ মুজিবুর রহমান, বাউফল, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফলের ধুলিয়া ইউনিয়নের ধুলিয়া বাজার এলাকায় সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর, মাছের ঘের ও মুরগির খামার করেছেন স্থানীয় ক্ষমতাসিন ও বিরাধী দলীয় প্রভাবশালীরা। ভূমি অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপণা তুলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবাসা-বাণিজ্য করে আসছেন তারা। এদিকে জমির অভাবে বাজার সম্প্রসারণ প্রকল্প ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আটকে পড়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর দেখছি-করছি বলে সময় ক্ষেপণ করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, গত ২৬ জুন ওই সরকারি জমি উদ্ধারের জন্য লাল নিশান টাঙিয়ে দেওয়া হলেও প্রশাসন নিরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যাক্তি ও সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ধুলিয়া ইউনিয়নের ঘুরচাকাঠী মৌজায় সরকারি খাস খতিয়ানের ১০/১৫৮৭ দাগে ২.৭০ একর জমি রয়েছে। যার মধ্যে ধুলিয়া বাজার এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ জমি খাস রয়েছে। এসব জমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় প্রভাবশালীরা দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে। ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি জমিতে পাকা দোকান ঘর, মুরগির খামার ও মাছের ঘের করেছেন ওই প্রভাবশালীরা। সম্প্রতি স্থানীয় এমপি ধুলিয়া বাজার সম্প্রসারণের জন্য বরাদ্দ দিলেও সরকারি জমি বেদখল থাকায় বাজার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা। ধুলিয়া বাজারের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে সরকারি জমিতে ২০ থেকে ২২টি পাকা ও আধা পাকা ঘর রয়েছে। এসব দোকানঘর অন্যজনের কাছে ভাড়াও দিয়েছেন দখলদাররা। দোকান ঘরের পিছনের ডোবা-নালায় মুরগির খামার ও মাছের ঘের করা হয়েছে। সরকারি জমিতে এসব দোকান ঘরের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মিয়ার ৪টি, সজল ওঝার ৩টি, সুশান্ত ওঝার ২টি, ইউনিয়ন যুবদল নেতা নাসির উদ্দিনের ১টি ও মিজান হাওলাদারের দখলে ২টি ঘর রয়েছে।

বাজার উন্নয়নের স্বার্থে সরকারি ওই জমি ছেড়ে দিতে বারবার বলা হলেও দখলদাররা জমি ছাড়ছেন না। সর্বশেষ গত ২৬ জুন স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশান টাঙিয়ে দেন। কিন্তু জমি উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, সরকারি জমি দখল করে স্থাপণা করেছেন প্রভাবশালীরা। তারা নিয়মিত ভূমি অফিসে টাকা দিয়ে জমি দখলে রাখছেন।

এবিষয়ে ধুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মু. হুমায়ন কবির জানান, বাজার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি জমি বেদখল থাকায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলছেন।

দখলদারদের কাছে ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ধুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম খান বলেন, প্রাথমিক ভাবে খাস জমির সীমানা নির্ধারণ করে সেই জমিতে লাল নিশান টাঙিয়ে জমি দখলে নেওয়া হয়েছে। অবৈধ স্থাপণা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন।

বাউফল উপজেলা সহাকরী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক কুমার কুন্ডু বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে আমরাও জড়িত। সরকারি জমি খালি করতে বলা হয়েছে। যদি স্ব-ইচ্ছায় চলে না যান, তাহলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।