০২:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে সেই চিরকুট লিখে আ*ত্ম*হ*ত্যা*র ঘটনায় বাবার মা*ম*লা; গ্রে*ফ*তার-১

এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফলে সেই চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা নজরুল ইসলাম খান বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার (১৭ মার্চ) বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলার পরপরই নিহত ছাত্রীর পরিবার ও স্বজনরা কায়দে আজম (৪৭) নামে এজাহার নামীয় এক আসামিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

গত শুক্রবার বিকালে ‘আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছুই করিনি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য আর ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ শান্তি চলে।’ চিরকুট লিখে পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুমকুম (১৫) ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

ওইদিন রাত ১২টার দিকে কুমকুমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ পরের দিন শনিবার ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার এজাহার, কুমকুমের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করতো তাওসিন নামের এক তরুণ। তাওসিন একই স্কুলের পরীক্ষার্থী। তবে বিষয়টি তাওসিনের পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায় কুমকুমের পরিবার। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে তাওসিন। বৃহস্পতিবার কুমকুমের সঙ্গে আরেক সহপাঠীর তোলা ছবির সঙ্গে আজেবাজে ক্যাপশন লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তাওসিন। তা জানার পর চিরকুট লিখে নিজ কক্ষের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে কুমকুম।

কুমকুমের মা অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় তাওসিন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তাওসিনের পরিবারকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে ওই বখাটের সাহস আরও বেড়ে যায়। মেয়ের সঙ্গে তার এক সহপাঠির তোলা স্বাভাবিক ছবিতে বাজে মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় তাওসিন। এতে লোকলজ্জার ভয়ে তার মেয়ে আত্মহত্যা করে।

মামলায় ৯ জনের নাম দেওয়া প্রসঙ্গে মামলার বাদী ও নিহত ছাত্রীর বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উত্ত্যক্তকারী বখাটের বিষয়ে তার অভিভাবক ও স্বজনদের কাছে বিচার দেওয়া হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদি তাওসিনের পরিবার থেকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতো না। বখাটেপনাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অপরাধে তাওসিন ছাড়া আরও ৮জনকে আসামি করা হয়েছে।

বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, “মামলা দায়েরের পরপরই একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে ৩,৫৭০ কেজি জাটকা জব্দ; দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ

error: Content is protected !!

বাউফলে সেই চিরকুট লিখে আ*ত্ম*হ*ত্যা*র ঘটনায় বাবার মা*ম*লা; গ্রে*ফ*তার-১

আপডেট সময়: ০২:১৯:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফলে সেই চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা নজরুল ইসলাম খান বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার (১৭ মার্চ) বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলার পরপরই নিহত ছাত্রীর পরিবার ও স্বজনরা কায়দে আজম (৪৭) নামে এজাহার নামীয় এক আসামিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

গত শুক্রবার বিকালে ‘আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছুই করিনি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য আর ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ শান্তি চলে।’ চিরকুট লিখে পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুমকুম (১৫) ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

ওইদিন রাত ১২টার দিকে কুমকুমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ পরের দিন শনিবার ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার এজাহার, কুমকুমের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করতো তাওসিন নামের এক তরুণ। তাওসিন একই স্কুলের পরীক্ষার্থী। তবে বিষয়টি তাওসিনের পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায় কুমকুমের পরিবার। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে তাওসিন। বৃহস্পতিবার কুমকুমের সঙ্গে আরেক সহপাঠীর তোলা ছবির সঙ্গে আজেবাজে ক্যাপশন লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তাওসিন। তা জানার পর চিরকুট লিখে নিজ কক্ষের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে কুমকুম।

কুমকুমের মা অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় তাওসিন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তাওসিনের পরিবারকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে ওই বখাটের সাহস আরও বেড়ে যায়। মেয়ের সঙ্গে তার এক সহপাঠির তোলা স্বাভাবিক ছবিতে বাজে মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় তাওসিন। এতে লোকলজ্জার ভয়ে তার মেয়ে আত্মহত্যা করে।

মামলায় ৯ জনের নাম দেওয়া প্রসঙ্গে মামলার বাদী ও নিহত ছাত্রীর বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উত্ত্যক্তকারী বখাটের বিষয়ে তার অভিভাবক ও স্বজনদের কাছে বিচার দেওয়া হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদি তাওসিনের পরিবার থেকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতো না। বখাটেপনাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অপরাধে তাওসিন ছাড়া আরও ৮জনকে আসামি করা হয়েছে।

বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, “মামলা দায়েরের পরপরই একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”