১০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গলাচিপায় এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও প্রাইমারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পরকীয়া; স্বামীর অভিযোগ

মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, গলাচিপা, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ২নং গোলখালী এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ২২নং দক্ষিণ সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরার কথা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে তোলপাড় চলছে। এনিয়ে শিক্ষক ও সুশীল সমাজের মাঝে চলছে সমালোচনার ঝড়।

খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, একজন গোলখালী এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন, আর অপরজন সোনাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। আরো জানা যায়, ১৯৯৫ সালে ১০ই জুন মুজাম্মেল বিশ্বাসের সাথে শিউলি আক্তার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এর পর ১৯৯৬ সালে ২৯ অক্টোবর এই দম্পত্তির সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কন্যা সন্তানটির নাম রাখা হয় ফারওয়া বিশ্বাস মিশু। ভুক্তভোগী মুজাম্মেল বিশ্বাস ২০০০ সালে কর্মক্ষেত্রে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে। এরই মধ্যে ২০০৩ সালে স্ত্রী শিউলি আক্তারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকরি হয়, কিছুদিন যেতে না যেতেই মুজাম্মেল বিশ্বাস খবর পায় তার স্ত্রী শিউলি আক্তার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত। মাওলানা শফিকুর রহমানের বাড়ি এবং শিউলি আক্তারের শশুর বাড়ি একই এলাকায় পাশাপাশি বাড়ি। মোজাম্মেল বিশ্বাস এসব খবর পেয়ে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন। শুরু হয় দাম্পত্য জীবনের কোলাহল। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে চলতে থাকে নিয়মিত ঝগড়া বিভেদ। এরই মধ্যে দেখতে দেখতে কন্যা মিশুর বয়স বেড়ে দাড়ায় ১৭ বছরে। ২০১৪ সালে ২১ মার্চ শুক্রবার মিশু তার নিজ ঘরে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু বরণ করেন। তখন মিশু এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো। মিশু মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা হয় এবং পরে মিশুর পিতা মোজাম্মেল বিশ্বাস গত ১২জুন ২০১৪ ইং তারিখ আমতলী কোর্টে মিশুর মা শিউলি আক্তারকে ১ নাম্বার আসামী এবং প্রেমিক মওলানা শফিকুর রহমানকে ৩ নং আসামী সহ মোট ৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং CR 61/ 2014।

মিশুর পিতা মোজাম্মেল বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার ও মাওলানা শফিকুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া প্রেম করে আসছে, এবং আমার হাতে কয়েকবার ধরাও পড়েছে। এনিয়ে এলাকায় একাধিক বার সালিশ ব্যবস্থা হয়েছে। আমার মেয়ে মিশু তার মায়ের পরকীয়া প্রেম সম্পর্কে জানতে পারে। এজন্য আমার মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে এই পরকীয়া প্রেমিক যুগল। আমি জানতে পেরে মামলা করেছি। মামলা করার পড়ে আমাকে এই প্রেমিক যুগল বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ছাড়াও মারধর করতো। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন আমতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জি এম দেলোয়ার হোসেন, আমতলী পৌরসভার সাবেক মেয়র মতিউর রহমান ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা আমাকে জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতে বাধ্য করে এবং আমাকে ৭৫ শতাংশ জমি দিয়ে মামলাটি মিমাংসা করে দেয়। এতোকিছু হওয়ার পরেও আমার স্ত্রী শিউলি ও মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমান নিয়মিত পরকীয়া প্রেম চালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে তারা দুজনে আমার বসতবাড়ীতে হাতে নাতে ধরা পরে এবং এই জঘন্য কাজের জন্য আমিসহ এলাকাবাসী মাওলানাসহ দুজনকে উত্তম মধ্যম প্রহার করে। যার ফলে আমি এবিষয়ে নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইং তারিখ আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও মাওলানা শফিকুর রহমান মাদ্রাসার সুপার এদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে গলাচিপায় অবস্থিত সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প কমান্ডার বরাবর লিখিত অভিযোগ করি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে ২৬ অক্টোবর রবিবার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা শফিকুর রহমান বলেন, আমাকে এর আগে দুটো মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, আবার অদৃশ্য কারনে তিনিই মামলাটি তুলে এনেছে। তাছাড়া আমার সাথে মোজাম্মেল বিশ্বাসের দির্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এজন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে গলাচিপা থানার ওসি মোঃ আশাদুর রহমান বলেন, এবিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে, আশাকরি শীঘ্র’ই প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করার হবে।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে ৩,৫৭০ কেজি জাটকা জব্দ; দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ

error: Content is protected !!

গলাচিপায় এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও প্রাইমারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পরকীয়া; স্বামীর অভিযোগ

আপডেট সময়: ১০:৫৬:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, গলাচিপা, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ২নং গোলখালী এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ২২নং দক্ষিণ সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরার কথা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে তোলপাড় চলছে। এনিয়ে শিক্ষক ও সুশীল সমাজের মাঝে চলছে সমালোচনার ঝড়।

খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, একজন গোলখালী এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন, আর অপরজন সোনাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। আরো জানা যায়, ১৯৯৫ সালে ১০ই জুন মুজাম্মেল বিশ্বাসের সাথে শিউলি আক্তার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এর পর ১৯৯৬ সালে ২৯ অক্টোবর এই দম্পত্তির সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কন্যা সন্তানটির নাম রাখা হয় ফারওয়া বিশ্বাস মিশু। ভুক্তভোগী মুজাম্মেল বিশ্বাস ২০০০ সালে কর্মক্ষেত্রে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে। এরই মধ্যে ২০০৩ সালে স্ত্রী শিউলি আক্তারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকরি হয়, কিছুদিন যেতে না যেতেই মুজাম্মেল বিশ্বাস খবর পায় তার স্ত্রী শিউলি আক্তার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত। মাওলানা শফিকুর রহমানের বাড়ি এবং শিউলি আক্তারের শশুর বাড়ি একই এলাকায় পাশাপাশি বাড়ি। মোজাম্মেল বিশ্বাস এসব খবর পেয়ে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন। শুরু হয় দাম্পত্য জীবনের কোলাহল। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে চলতে থাকে নিয়মিত ঝগড়া বিভেদ। এরই মধ্যে দেখতে দেখতে কন্যা মিশুর বয়স বেড়ে দাড়ায় ১৭ বছরে। ২০১৪ সালে ২১ মার্চ শুক্রবার মিশু তার নিজ ঘরে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু বরণ করেন। তখন মিশু এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো। মিশু মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা হয় এবং পরে মিশুর পিতা মোজাম্মেল বিশ্বাস গত ১২জুন ২০১৪ ইং তারিখ আমতলী কোর্টে মিশুর মা শিউলি আক্তারকে ১ নাম্বার আসামী এবং প্রেমিক মওলানা শফিকুর রহমানকে ৩ নং আসামী সহ মোট ৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং CR 61/ 2014।

মিশুর পিতা মোজাম্মেল বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার ও মাওলানা শফিকুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া প্রেম করে আসছে, এবং আমার হাতে কয়েকবার ধরাও পড়েছে। এনিয়ে এলাকায় একাধিক বার সালিশ ব্যবস্থা হয়েছে। আমার মেয়ে মিশু তার মায়ের পরকীয়া প্রেম সম্পর্কে জানতে পারে। এজন্য আমার মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে এই পরকীয়া প্রেমিক যুগল। আমি জানতে পেরে মামলা করেছি। মামলা করার পড়ে আমাকে এই প্রেমিক যুগল বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ছাড়াও মারধর করতো। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন আমতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জি এম দেলোয়ার হোসেন, আমতলী পৌরসভার সাবেক মেয়র মতিউর রহমান ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা আমাকে জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতে বাধ্য করে এবং আমাকে ৭৫ শতাংশ জমি দিয়ে মামলাটি মিমাংসা করে দেয়। এতোকিছু হওয়ার পরেও আমার স্ত্রী শিউলি ও মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমান নিয়মিত পরকীয়া প্রেম চালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে তারা দুজনে আমার বসতবাড়ীতে হাতে নাতে ধরা পরে এবং এই জঘন্য কাজের জন্য আমিসহ এলাকাবাসী মাওলানাসহ দুজনকে উত্তম মধ্যম প্রহার করে। যার ফলে আমি এবিষয়ে নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইং তারিখ আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও মাওলানা শফিকুর রহমান মাদ্রাসার সুপার এদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে গলাচিপায় অবস্থিত সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প কমান্ডার বরাবর লিখিত অভিযোগ করি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে ২৬ অক্টোবর রবিবার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা শফিকুর রহমান বলেন, আমাকে এর আগে দুটো মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, আবার অদৃশ্য কারনে তিনিই মামলাটি তুলে এনেছে। তাছাড়া আমার সাথে মোজাম্মেল বিশ্বাসের দির্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এজন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে গলাচিপা থানার ওসি মোঃ আশাদুর রহমান বলেন, এবিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে, আশাকরি শীঘ্র’ই প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করার হবে।