০৭:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুমকীতে অধ্যক্ষের সামনেই ছাত্রলীগের কমিটির দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত-৫

মোঃ রিয়াজুল ইসলামঃ পটুয়াখালীর দুমকীতে সরকারি জনতা কলেজে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তাঁর সামনেই কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় নূর আলম সিকদার (২১) ও আরাফাত মোল্লা (১৬) সহ ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বুধবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি সানাউল্লাহ হিরা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঈন সিকদার বেলা ১২টার দিকে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ হাওলাদারের রুমে দেখা করতে যান। এ সময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান সুধা ও তার অনুসারী কয়েকজন কর্মী সমর্থক অধ্যক্ষের কার্যালয়ে ঢোকেন। এ সময় দুই গ্রুপের এ সংঘর্ষে নূর আলম সিকদার (২১), আরাফাত মোল্লা (১৬), রিফাত মৃধা (২১), মো: ইমরান হোসেন (২২) ও মো: মুসা (২১) নামের ৫জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

সরকারি জনতা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সানাউল্লাহ হিরা বলেন, “অধ্যক্ষ স্যারের সামনেই হঠাৎ করে পেছন থেকে সুধা’র নেতৃত্বে খায়ের, মিজান, সাঈদ, নূর আলম, রাফিন, সুমনসহ আরও কয়েকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার সেক্রেটারি সামান্য আহত হলেও ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।”

এদিকে আহত নূর আলম সিকদার দাবি করেন, “সেই দিন সুধা ও আবু সাঈদের মিছিলে যাওয়ার জেরে আজ সকালে হিরা ও মঈনের লোকজন আমাকে প্রথমে মারধর করে। পরে অধ্যক্ষের রুমে সুধাসহ ৫/৬ জন বিচার দিতে যাই। কিন্তু সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা হিরা, মঈনসহ কয়েকজন বহিরাগত শিক্ষার্থী নিয়ে অধ্যক্ষ স্যারের সামনেই আমাকে স্টীল পাইপ দিয়ে আঘাত করে।”

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আবু সুফিয়ান সুধা সাউথ বিডি নিউজ ২৪ কে বলেন, “আসলে কেউ হামলা বা মারামারি করতে অধ্যক্ষের রুমে যায় না। মূলত নূর আলমকে সকালে যারা মারধর করেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে বিচার দিতে গেছিলাম। হামলা করা আমার উদ্দেশ্য নয়।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ হাওলাদার বলেন, “নূতন কমিটি পাওয়ায় ওরা (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) আমার সাথে দেখা করতে আসে। হঠাৎ সুধাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র আমার রুমে ঢুকে ওদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার রুমের আসবাবপত্রেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”

জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র নিজ হাতে গড়া সংগঠনে কোন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রের জায়গা নেই। অচিরেই তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।”

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, “ঘটনা শোনার সাথে সাথে ক্যাম্পাসে গিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন সানাউল্লাহ হিরাকে সভাপতি ও মো: মঈন সিকদারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কমিটি দেয় পটুয়াখালী জেলা শাখা ছাত্রলীগ। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে ওই কমিটির বিরুদ্ধে ২৪ জুন মিছিল করে সভাপতি আবু সাঈদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান সুধা।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে ৩,৫৭০ কেজি জাটকা জব্দ; দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ

error: Content is protected !!

দুমকীতে অধ্যক্ষের সামনেই ছাত্রলীগের কমিটির দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত-৫

আপডেট সময়: ০১:০২:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

মোঃ রিয়াজুল ইসলামঃ পটুয়াখালীর দুমকীতে সরকারি জনতা কলেজে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তাঁর সামনেই কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় নূর আলম সিকদার (২১) ও আরাফাত মোল্লা (১৬) সহ ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বুধবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি সানাউল্লাহ হিরা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঈন সিকদার বেলা ১২টার দিকে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ হাওলাদারের রুমে দেখা করতে যান। এ সময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান সুধা ও তার অনুসারী কয়েকজন কর্মী সমর্থক অধ্যক্ষের কার্যালয়ে ঢোকেন। এ সময় দুই গ্রুপের এ সংঘর্ষে নূর আলম সিকদার (২১), আরাফাত মোল্লা (১৬), রিফাত মৃধা (২১), মো: ইমরান হোসেন (২২) ও মো: মুসা (২১) নামের ৫জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

সরকারি জনতা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সানাউল্লাহ হিরা বলেন, “অধ্যক্ষ স্যারের সামনেই হঠাৎ করে পেছন থেকে সুধা’র নেতৃত্বে খায়ের, মিজান, সাঈদ, নূর আলম, রাফিন, সুমনসহ আরও কয়েকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার সেক্রেটারি সামান্য আহত হলেও ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।”

এদিকে আহত নূর আলম সিকদার দাবি করেন, “সেই দিন সুধা ও আবু সাঈদের মিছিলে যাওয়ার জেরে আজ সকালে হিরা ও মঈনের লোকজন আমাকে প্রথমে মারধর করে। পরে অধ্যক্ষের রুমে সুধাসহ ৫/৬ জন বিচার দিতে যাই। কিন্তু সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা হিরা, মঈনসহ কয়েকজন বহিরাগত শিক্ষার্থী নিয়ে অধ্যক্ষ স্যারের সামনেই আমাকে স্টীল পাইপ দিয়ে আঘাত করে।”

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আবু সুফিয়ান সুধা সাউথ বিডি নিউজ ২৪ কে বলেন, “আসলে কেউ হামলা বা মারামারি করতে অধ্যক্ষের রুমে যায় না। মূলত নূর আলমকে সকালে যারা মারধর করেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে বিচার দিতে গেছিলাম। হামলা করা আমার উদ্দেশ্য নয়।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ হাওলাদার বলেন, “নূতন কমিটি পাওয়ায় ওরা (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) আমার সাথে দেখা করতে আসে। হঠাৎ সুধাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র আমার রুমে ঢুকে ওদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার রুমের আসবাবপত্রেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”

জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র নিজ হাতে গড়া সংগঠনে কোন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রের জায়গা নেই। অচিরেই তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।”

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, “ঘটনা শোনার সাথে সাথে ক্যাম্পাসে গিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন সানাউল্লাহ হিরাকে সভাপতি ও মো: মঈন সিকদারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কমিটি দেয় পটুয়াখালী জেলা শাখা ছাত্রলীগ। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে ওই কমিটির বিরুদ্ধে ২৪ জুন মিছিল করে সভাপতি আবু সাঈদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান সুধা।