০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানসহ আ’লীগের ৫১ নেতা-কর্মীর নামে কলাপাড়া থানায় মামলা

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ ক্ষমতাচ্যূত শেখ হাসিনা সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের ৫১ জন নেতা-কর্মীর নামে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ আগস্ট উপজেলা বিএনপির নতুন বাজার দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে।

রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক বিশ্বাস শফিকুর রহমান টুলু এ মামলাটি দায়ের করেন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান ছাড়া এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামীরা হলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, পৌর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম, কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান, চকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর ওরফে কেরামত হাওলাদার, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তারেকুজ্জামান, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুর রহমান, বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবীর, উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান অমি গাজী।

এ মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ৩০ আগস্ট উপজেলা বিএনপির নতুন বাজার এলাকার দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ মামলার আসামীরা রামদা, ছেনা, বগি লোহার রড, দা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে বসা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জীবনের তরে শেষ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বাঁচার জন্য ডাক-চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ মামলার আসামীরা তখন দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও ভিতরে ককটেল ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে দলের কার্যালয়ের ভিতর থাকা নেতৃবৃন্দ ও আশেপাশের লোকজন আতংকিত হইয়া জীবন রক্ষার জন্য দৌড়ে প্রাণ বাঁচায়। এ সময় আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানমাল রক্ষার জন্য দোকানপাট দ্রুত বন্ধ করে চলে যায়। এরপর এ মামলার আসামীরা বিএনপি কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র পিটিয়ে ভাঙচুর করে। এতে কার্যালয়ের চার লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। এ ছাড়া কার্যালয়ে টানানো ২০টি সিলিং ফ্যান, ১টি রঙিন টিভি, ৭টি স্ট্যান্ড ফ্যান লুট করে নিয়ে যায়। যার মূল্য এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এ মামলার কয়েকজন আসামী কার্যালয়ের আলমিরা ভেঙে মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়। সকল আসামীরা প্রায় ৩০ মিনিট তান্ডব চালিয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চার করে।

এ মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, এ মামলার বাদী কলাপাড়া থানায় খবর দিলে থানা কর্তৃপক্ষ ওই সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়। ওই সময় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করিলে আসামিদের ক্ষমতা ও প্রভাবের কারণে তখন আইনানুগ ব্যবস্থা তাঁরা নিতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ মামলার আসামিরা কেউ বর্তমানে এলাকায় নেই। গত ৫ আগষ্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছে। যে কারণে কারও সাথে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মেদ জানান, “গতকাল মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন, পরীক্ষা বন্ধ, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন 

error: Content is protected !!

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানসহ আ’লীগের ৫১ নেতা-কর্মীর নামে কলাপাড়া থানায় মামলা

আপডেট সময়: ০১:১২:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ ক্ষমতাচ্যূত শেখ হাসিনা সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের ৫১ জন নেতা-কর্মীর নামে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ আগস্ট উপজেলা বিএনপির নতুন বাজার দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে।

রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক বিশ্বাস শফিকুর রহমান টুলু এ মামলাটি দায়ের করেন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান ছাড়া এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামীরা হলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, পৌর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম, কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান, চকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর ওরফে কেরামত হাওলাদার, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তারেকুজ্জামান, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুর রহমান, বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবীর, উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান অমি গাজী।

এ মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ৩০ আগস্ট উপজেলা বিএনপির নতুন বাজার এলাকার দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ মামলার আসামীরা রামদা, ছেনা, বগি লোহার রড, দা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে বসা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জীবনের তরে শেষ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বাঁচার জন্য ডাক-চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ মামলার আসামীরা তখন দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও ভিতরে ককটেল ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে দলের কার্যালয়ের ভিতর থাকা নেতৃবৃন্দ ও আশেপাশের লোকজন আতংকিত হইয়া জীবন রক্ষার জন্য দৌড়ে প্রাণ বাঁচায়। এ সময় আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানমাল রক্ষার জন্য দোকানপাট দ্রুত বন্ধ করে চলে যায়। এরপর এ মামলার আসামীরা বিএনপি কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র পিটিয়ে ভাঙচুর করে। এতে কার্যালয়ের চার লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। এ ছাড়া কার্যালয়ে টানানো ২০টি সিলিং ফ্যান, ১টি রঙিন টিভি, ৭টি স্ট্যান্ড ফ্যান লুট করে নিয়ে যায়। যার মূল্য এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এ মামলার কয়েকজন আসামী কার্যালয়ের আলমিরা ভেঙে মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়। সকল আসামীরা প্রায় ৩০ মিনিট তান্ডব চালিয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চার করে।

এ মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, এ মামলার বাদী কলাপাড়া থানায় খবর দিলে থানা কর্তৃপক্ষ ওই সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়। ওই সময় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করিলে আসামিদের ক্ষমতা ও প্রভাবের কারণে তখন আইনানুগ ব্যবস্থা তাঁরা নিতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ মামলার আসামিরা কেউ বর্তমানে এলাকায় নেই। গত ৫ আগষ্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছে। যে কারণে কারও সাথে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মেদ জানান, “গতকাল মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”