০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কলাপাড়া মহিলা কলেজে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের পদ দখলে রেখেছেন মঞ্জুরুল আলম; গভর্ণিং বডিও মানছেন না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম অবৈধভাবে অধ্যক্ষের পদটি আটকে রেখেছেন। তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে কলেজের জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক (ইংরেজি) আবুল কালাম আজাদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেও কলেজের গভর্ণিং বডি তা মানছেন না। ফলে প্রশাসনিক এ পদটি নিয়ে অচলাবস্থা কাটছেই না।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাইদ ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মারা গেলে পদটি শুন্য হলে গভর্নিং বডি কলেজের সহকারি অধ্যাপক জহির উদ্দিন মোঃ ফারুককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করেন। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি নির্বাহী ক্ষমতাবলে গভর্ণিং বডির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবীর অবৈধভাবে তাকে সরিয়ে সহকারি অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী কলেজের উপাধ্যক্ষ অথবা তার অনুপস্থিতিতে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক হিসেবে আবুল কালাম আজাদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগে বাধ্যবাধকতা থাকলেও গভর্ণিং বডি তা উপেক্ষা করে কনিষ্ট সহকারি অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। গভর্নিং বডির সভাপতির এ অবৈধ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য আবুল কালাম আজাদ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিপ্তরে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতিকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।

এদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে চলতি বছরের ১৯ মে মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ওই আদেশও উপেক্ষা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ এক বছর এ দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও অদ্যবধি তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। এক বছরের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে একজন পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ নিয়োগের নিয়ম থাকলেও তিনি তা না করে আড়াই বছর ধরে পদটি দখলে রেখেছেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা উপক্ষো করে কেন অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদটি দখলে রেখেছেন এমন প্রশ্নের কোন সদত্তোর দিতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম। তিনি বলেন, “করোনার কারনে কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে কলেজটি এডহক কমিটি দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এখন পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।”

তবে একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জহির উদ্দিন মো. ফারুক বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মঞ্জুরুল আলম আড়াই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন যা কোনোভাবেই বৈধ নয়। এ সময়ে তিনি কোনো শিক্ষক-কর্মচারীর সাথে ভালো ব্যবহারও করেননি। তাঁর দুর্ব্যবহারে সবাই অতিষ্ঠ। তিনি কলেজের অর্থেরও অপচয় করছেন।”

কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবীর চিকিৎসার্থে ভারতে অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন, পরীক্ষা বন্ধ, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন 

error: Content is protected !!

কলাপাড়া মহিলা কলেজে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের পদ দখলে রেখেছেন মঞ্জুরুল আলম; গভর্ণিং বডিও মানছেন না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা

আপডেট সময়: ০২:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম অবৈধভাবে অধ্যক্ষের পদটি আটকে রেখেছেন। তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে কলেজের জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক (ইংরেজি) আবুল কালাম আজাদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেও কলেজের গভর্ণিং বডি তা মানছেন না। ফলে প্রশাসনিক এ পদটি নিয়ে অচলাবস্থা কাটছেই না।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাইদ ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মারা গেলে পদটি শুন্য হলে গভর্নিং বডি কলেজের সহকারি অধ্যাপক জহির উদ্দিন মোঃ ফারুককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করেন। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি নির্বাহী ক্ষমতাবলে গভর্ণিং বডির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবীর অবৈধভাবে তাকে সরিয়ে সহকারি অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী কলেজের উপাধ্যক্ষ অথবা তার অনুপস্থিতিতে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক হিসেবে আবুল কালাম আজাদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগে বাধ্যবাধকতা থাকলেও গভর্ণিং বডি তা উপেক্ষা করে কনিষ্ট সহকারি অধ্যাপক মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। গভর্নিং বডির সভাপতির এ অবৈধ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য আবুল কালাম আজাদ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিপ্তরে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতিকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।

এদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে চলতি বছরের ১৯ মে মঞ্জুরুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে জেষ্ঠ্যতম সহকারি অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ওই আদেশও উপেক্ষা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ এক বছর এ দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও অদ্যবধি তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। এক বছরের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে একজন পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ নিয়োগের নিয়ম থাকলেও তিনি তা না করে আড়াই বছর ধরে পদটি দখলে রেখেছেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা উপক্ষো করে কেন অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদটি দখলে রেখেছেন এমন প্রশ্নের কোন সদত্তোর দিতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম। তিনি বলেন, “করোনার কারনে কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে কলেজটি এডহক কমিটি দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এখন পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।”

তবে একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জহির উদ্দিন মো. ফারুক বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মঞ্জুরুল আলম আড়াই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন যা কোনোভাবেই বৈধ নয়। এ সময়ে তিনি কোনো শিক্ষক-কর্মচারীর সাথে ভালো ব্যবহারও করেননি। তাঁর দুর্ব্যবহারে সবাই অতিষ্ঠ। তিনি কলেজের অর্থেরও অপচয় করছেন।”

কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবীর চিকিৎসার্থে ভারতে অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।