০৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুমকীতে নাস্তার টাকার নামে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী: ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে পটুয়াখালী জেলার দুমকীর বিভিন্ন গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে, গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব লাইনে দ্রুত বিদুৎ সংযোগ দেয়ার নামে দুমকী সাব জোনাল অফিসের প্রকৌশলী, ঠিকাদার, লাইনম্যান ও লেবারদের বিরুদ্ধে নাস্তার টাকার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এসব টাকা পয়সা স্থানীয় কতিপয় দালাল চক্রের মাধ্যমে আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী জানান, নিজেদের উদ্যোগে ডালপালা কেটে পরিষ্কার করে বিদুৎ অফিসে যোগাযোগ করলেও টাকা না দেয়ায় গত কয়েক দিন ধরে সংযোগ দিচ্ছেন না তারা। দাবীকৃত টাকা না দেয়া হলে তীব্র গরমের ভোগান্তিতে রাখা হবে বলে উল্টো হুমকি ধামকিও দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও শুক্রবার (৩১ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “দুমকী উপজেলা পরিবার” নামের একটি গ্রুপে মোঃ রাতুল হাসান নামে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট করলে নেটিজেনদের কমেন্টে স্পষ্ট হয়ে ওঠে গ্রাহকদের জিম্মির বিষয়টি।

শনিবার (১ জুন) উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈসমাইল মল্লিকের ছেলে বেল্লাল হোসেন দ্রুত বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগের জন্য নগদ টাকা উঠাচ্ছেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডের শহিদুল বলেছে যে টাকা দাও, টাকা দিলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দ্রুত লাইন দেবে। আমি বলেছি যে আগে বাতি জ্বলবে তারপর টাকা দেব। শহিদুল প্রথমে বলছে ৩ শত, পরে বলে ১ হাজার এবং সর্বশেষ ২ হাজার টাকা দাবী করেছে। এজন্য আমি ৭ শত ২০ টাকা উঠাইছি।

একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আঃ সালামের ছেলে অভিযুক্ত শহিদুল বলেন, আমি আবু শরীফের কাছে ফোন দিয়ে বলছি যে আমাদের লাইনটা একটু তাড়াতাড়ি দেন, কিছু নাস্তা পানির খরচ দিব।

অপরদিকে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামের সাগর হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বিদুৎ অফিসে এসে জানান, অফিসের লোকজনের বিরুদ্ধে টাকা লেন দেনের যে অভিযোগ উঠেছে তা আপনারা অনুসন্ধান করে দেখেন। এগুলো মিথ্যা নয়। আমার ওয়ার্ডে প্রায় ৭-৮ কি.মি.লাইনের ডালপালা কেটে সরিয়ে আমি সরাসরি অফিসে এসে ৪ বার বলার পরেও কোন ভ্রুক্ষেপ করছে না। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আরও বলেন, টাকা লেনদেনের মাধ্যমে আগে সংযোগ দেয়ার মত নোংরা কাজ বন্ধ করতে হবে, নইলে কিন্তু দুমকী উপজেলাবাসী উপযুক্ত জবাব দেবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী বাবুল হোসেন জানান, লাইনে কাজ করেন ঠিকাদার, লাইনম্যান ও লেবার। কোথাও কোন অর্থ লেনদেন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

দুমকী সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মো. ইমরান হোসেন সাউথ বিডি নিউজ ২৪-কে বলেন, লাইন মেরামত করা আমাদের কাজ। এতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। এলাকাবাসী যেন এ বিষয়ে কোন লোকের সাথে টাকা পয়সা লেনদেন না করে। দিন রাত আমার লোকজন কাজ করে চলছে। কেউ একদিন আগে পাবে হয়তো কেউ পরের দিন পাবে। তবে আমার অফিসের কারো বিরুদ্ধে উপযুক্ত ডকুমেন্টসসহ দিলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২৬ মে দিবাগত রাতে রেমালের তান্ডবে দুমকীতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন, পরীক্ষা বন্ধ, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন 

error: Content is protected !!

দুমকীতে নাস্তার টাকার নামে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময়: ১০:২১:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী: ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে পটুয়াখালী জেলার দুমকীর বিভিন্ন গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে, গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব লাইনে দ্রুত বিদুৎ সংযোগ দেয়ার নামে দুমকী সাব জোনাল অফিসের প্রকৌশলী, ঠিকাদার, লাইনম্যান ও লেবারদের বিরুদ্ধে নাস্তার টাকার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এসব টাকা পয়সা স্থানীয় কতিপয় দালাল চক্রের মাধ্যমে আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী জানান, নিজেদের উদ্যোগে ডালপালা কেটে পরিষ্কার করে বিদুৎ অফিসে যোগাযোগ করলেও টাকা না দেয়ায় গত কয়েক দিন ধরে সংযোগ দিচ্ছেন না তারা। দাবীকৃত টাকা না দেয়া হলে তীব্র গরমের ভোগান্তিতে রাখা হবে বলে উল্টো হুমকি ধামকিও দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও শুক্রবার (৩১ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “দুমকী উপজেলা পরিবার” নামের একটি গ্রুপে মোঃ রাতুল হাসান নামে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট করলে নেটিজেনদের কমেন্টে স্পষ্ট হয়ে ওঠে গ্রাহকদের জিম্মির বিষয়টি।

শনিবার (১ জুন) উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈসমাইল মল্লিকের ছেলে বেল্লাল হোসেন দ্রুত বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগের জন্য নগদ টাকা উঠাচ্ছেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডের শহিদুল বলেছে যে টাকা দাও, টাকা দিলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দ্রুত লাইন দেবে। আমি বলেছি যে আগে বাতি জ্বলবে তারপর টাকা দেব। শহিদুল প্রথমে বলছে ৩ শত, পরে বলে ১ হাজার এবং সর্বশেষ ২ হাজার টাকা দাবী করেছে। এজন্য আমি ৭ শত ২০ টাকা উঠাইছি।

একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আঃ সালামের ছেলে অভিযুক্ত শহিদুল বলেন, আমি আবু শরীফের কাছে ফোন দিয়ে বলছি যে আমাদের লাইনটা একটু তাড়াতাড়ি দেন, কিছু নাস্তা পানির খরচ দিব।

অপরদিকে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামের সাগর হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বিদুৎ অফিসে এসে জানান, অফিসের লোকজনের বিরুদ্ধে টাকা লেন দেনের যে অভিযোগ উঠেছে তা আপনারা অনুসন্ধান করে দেখেন। এগুলো মিথ্যা নয়। আমার ওয়ার্ডে প্রায় ৭-৮ কি.মি.লাইনের ডালপালা কেটে সরিয়ে আমি সরাসরি অফিসে এসে ৪ বার বলার পরেও কোন ভ্রুক্ষেপ করছে না। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আরও বলেন, টাকা লেনদেনের মাধ্যমে আগে সংযোগ দেয়ার মত নোংরা কাজ বন্ধ করতে হবে, নইলে কিন্তু দুমকী উপজেলাবাসী উপযুক্ত জবাব দেবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী বাবুল হোসেন জানান, লাইনে কাজ করেন ঠিকাদার, লাইনম্যান ও লেবার। কোথাও কোন অর্থ লেনদেন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

দুমকী সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মো. ইমরান হোসেন সাউথ বিডি নিউজ ২৪-কে বলেন, লাইন মেরামত করা আমাদের কাজ। এতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। এলাকাবাসী যেন এ বিষয়ে কোন লোকের সাথে টাকা পয়সা লেনদেন না করে। দিন রাত আমার লোকজন কাজ করে চলছে। কেউ একদিন আগে পাবে হয়তো কেউ পরের দিন পাবে। তবে আমার অফিসের কারো বিরুদ্ধে উপযুক্ত ডকুমেন্টসসহ দিলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২৬ মে দিবাগত রাতে রেমালের তান্ডবে দুমকীতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।