০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে শশুর বাড়িতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

  • ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
  • আপডেট সময়: ১১:৩১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • ৩৩১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর বাউফলে শশুর বাড়ি থেকে আয়শা বেগম (২১) নামের এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৮’অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় উপজেলার কালীশ্বরী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আয়শার পিতা মোবারক হোসেন মৃধা ও স্বামী মোঃ সুজন মৃধা।

পারিবারিক সুত্রে, মৃত আয়শা বেগমের পিতা বলেন, বিবাহের পর থেকেই শশুর বাড়িতে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন হতো। এনিয়ে কয়েকবার পারিবারিকভাবে সালিশ মিমাংসা করা হয়। ঘটনার দিন ১৮’ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটার দিকে আয়শার সাথে পরিবারের কথা হয় এবং তখন কোনো রকম অসুস্থতার কথা বলেনি। কিন্তুু রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারে আয়শার মৃত্যু হয়েছে। পরে শশুর বাড়ির লোকজন ও স্বামী সুজন মৃধা জানান স্ট্রোক করে আয়শা মারা গেছে। পরিবারের দাবী আয়শার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তাকে শশুর বাড়ির লোকজন মিলে মারধর করে হত্যা করা করেছে। এর সঙ্গে জড়িত আয়শার স্বামী সুজন মৃধা, ননদ সানিয়া, ননদের স্বামী নান্নু ও শাশুড়ী পিয়ারা বেগম। এছাড়াও আয়শার পরিবার আরও বলেন, সুজন মৃধার আপন চাচা সাবেক পুলিশ সদস্য সেলিম মৃধা ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে জড়িতের বিচারের দাবি জানান। এনিয়ে আয়শার পরিবার মামলা করবেন বলেও প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

সাবেক পুলিশ সদস্য সেলিম মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “উভয় আমার বাড়ির লোক। গতকাল রাতে আমি জানতে পারি আয়শা স্ট্রোক করে মারা গেছে। ঘটনার সময় ছিলাম না, শুনেছি। এরপর আইনগতভাবে যে ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে কেউ অপরাধী প্রমানিত হলে তার বিচার হোক এটাই আমি চাই।”

মৃত আয়শার মেজো দুলাভাই সোহেল হাওলাদার বলেন, “বিয়ের পর একাধিকবার শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন হয়েছে আয়শার উপর। এ মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ রয়েছে। মনে হয় মারধর করে মেরে ফেলেছে।” সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ বিচারের দাবী জানান তিনি।

সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা রুবেল হাওলাদার বলেন, “আয়শাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে স্ট্রোক বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।” ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের দাবি জানান।

এদিকে ইউপি সদস্য হিরন মৃধা বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আয়শা আর সুজন প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ করে কিন্তুু তারা সম্পর্কে চাচা ভাতিজি। এজন্য বিবাহটা তার পরিবার মেনে নিতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে প্রভাব কিংবা প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ করে সুজন। একাধিক বার তাদের ঝামেলা হয়েছে। এলাকায় সুজনের রিপোর্ট তেমন ভালোনা একথা অনেকেই বলে। তবে মৃত্যুটা আমরা কেহ চোখে দেখিনি, শুনেছি এবং পরিবারের দাবী তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হোক, তবে নির্দোষ কেহ যেন না ফাঁসে জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটাই চাই বলে জানান।

এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ এ,টি,এম আরিচুল হক বলেন, “মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করবে পুলিশ।”

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

বাউফলে শশুর বাড়িতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

আপডেট সময়: ১১:৩১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর বাউফলে শশুর বাড়ি থেকে আয়শা বেগম (২১) নামের এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৮’অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় উপজেলার কালীশ্বরী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আয়শার পিতা মোবারক হোসেন মৃধা ও স্বামী মোঃ সুজন মৃধা।

পারিবারিক সুত্রে, মৃত আয়শা বেগমের পিতা বলেন, বিবাহের পর থেকেই শশুর বাড়িতে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন হতো। এনিয়ে কয়েকবার পারিবারিকভাবে সালিশ মিমাংসা করা হয়। ঘটনার দিন ১৮’ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটার দিকে আয়শার সাথে পরিবারের কথা হয় এবং তখন কোনো রকম অসুস্থতার কথা বলেনি। কিন্তুু রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারে আয়শার মৃত্যু হয়েছে। পরে শশুর বাড়ির লোকজন ও স্বামী সুজন মৃধা জানান স্ট্রোক করে আয়শা মারা গেছে। পরিবারের দাবী আয়শার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তাকে শশুর বাড়ির লোকজন মিলে মারধর করে হত্যা করা করেছে। এর সঙ্গে জড়িত আয়শার স্বামী সুজন মৃধা, ননদ সানিয়া, ননদের স্বামী নান্নু ও শাশুড়ী পিয়ারা বেগম। এছাড়াও আয়শার পরিবার আরও বলেন, সুজন মৃধার আপন চাচা সাবেক পুলিশ সদস্য সেলিম মৃধা ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে জড়িতের বিচারের দাবি জানান। এনিয়ে আয়শার পরিবার মামলা করবেন বলেও প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

সাবেক পুলিশ সদস্য সেলিম মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “উভয় আমার বাড়ির লোক। গতকাল রাতে আমি জানতে পারি আয়শা স্ট্রোক করে মারা গেছে। ঘটনার সময় ছিলাম না, শুনেছি। এরপর আইনগতভাবে যে ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে কেউ অপরাধী প্রমানিত হলে তার বিচার হোক এটাই আমি চাই।”

মৃত আয়শার মেজো দুলাভাই সোহেল হাওলাদার বলেন, “বিয়ের পর একাধিকবার শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন হয়েছে আয়শার উপর। এ মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ রয়েছে। মনে হয় মারধর করে মেরে ফেলেছে।” সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ বিচারের দাবী জানান তিনি।

সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা রুবেল হাওলাদার বলেন, “আয়শাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে স্ট্রোক বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।” ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের দাবি জানান।

এদিকে ইউপি সদস্য হিরন মৃধা বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আয়শা আর সুজন প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ করে কিন্তুু তারা সম্পর্কে চাচা ভাতিজি। এজন্য বিবাহটা তার পরিবার মেনে নিতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে প্রভাব কিংবা প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ করে সুজন। একাধিক বার তাদের ঝামেলা হয়েছে। এলাকায় সুজনের রিপোর্ট তেমন ভালোনা একথা অনেকেই বলে। তবে মৃত্যুটা আমরা কেহ চোখে দেখিনি, শুনেছি এবং পরিবারের দাবী তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হোক, তবে নির্দোষ কেহ যেন না ফাঁসে জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটাই চাই বলে জানান।

এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ এ,টি,এম আরিচুল হক বলেন, “মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করবে পুলিশ।”