জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ মাছের উৎপাদন বাড়াতে সমুদ্রে ৫৮ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে জেলার পাইকারি ও খুচরা মাছের বাজারে। একই সঙ্গে জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে নদীতে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ১ মে থেকে পটুয়াখালীর পায়রা ও তেতুলিয়া নদীতে জেলেরা জাল ফেললেও জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত রূপালি ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ। ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের মাছের।
জেলা শহরের নিউ মার্কেট ও হেতালিয়াবাধ ঘাটসহ বিভিন্ন মাছের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশীয় ও চাষের মাছ মিললেও ইলিশের দেখা নেই। কখনো কখনো ছোট আকারের ইলিশ ধরা পড়লেও দাম এতটাই বেশি যে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে।
নিউমার্কেট মৎস্য আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে সমুদ্রের মাছ না থাকায় বাজারে রুই, কাতল, মৃগেল, পাংগাস চাষের মাছের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় এবং চাহিদা বেশি হওয়ায় এসব মাছের দামও গত এক সপ্তাহে কেজিতে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চাষ পাংগাসের কেজি দু’শ টাকা থেকে দু’শ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলে আব্দুল রহিম বলেন, “নদীর পানি অতিরিক্ত গরমের কারনে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ নদীর গভীরে চলে যাওয়ায় আমাদের জালে মাছ ধরা পড়ছে না। প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। দাদন টাকা পরিশোধ করতে পারছি না।”
অন্যদিকে মাছের আড়তদার জব্বার ফকির বলেন, “মাছ না থাকায় আমাদের ব্যবসায় মন্দা। নদী ও সমুদ্র দু’জায়গা থেকেই মাছ কম আসছে। তাই দাম একটু বেশি।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “দুই মাসের জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে মাছ কম ধরা পড়ছে। আশা করছি, বৃষ্টি হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা পড়বে।”
পটুয়াখালীতে এখন বাজারে মাছ কম, দাম বেশি আর রূপালি ইলিশ যেন সোনার হরিণ। সাধারণ মানুষ অপেক্ষায় আছে ইলিশ মাছ কখন বাজারে আসবে। ফিরে আসবে মাছের দামের স্বাভাবিকতা।