০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গলাচিপা সরকারি হাসপাতালকে দালালমুক্ত করলেন ডা. মেজবাহউদ্দিন, বাউফল হাসপাতাল দালালে ভরপুর

এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট গলাচিপা উপজেলা সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সেবার মান উন্নত করতে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মেজবাহ উদ্দিন। আর এরই অংশ হিসেবে তিনি হাসপাতালের মধ্যে বিচরণ করা দালালদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে দালালদের রোষানলেও পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু এতে তিনি দমবার পাত্র নন। রোগীরা যেন তার সবচেয়ে আপনজন। রোগীরা যাতে সঠিক চিকিৎসা সেবা পান সেজন্য তিনি হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মুল করতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে ডা. মো. মেজবাহ উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “হাসপাতালে কোন ধরনের দালালের দৌরত্ব এখন আর নেই। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর কঠোর হস্তে দালাল প্রতিহত করতে পেরেছি।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারি হাসপাতালে দালালের উপদ্রব সব যায়গায় কমবেশি থাকে। এখানেও ছিল, আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই চেষ্টা করছি এদের উপদ্রব কমানোর জন্য। পাশাপাশি নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি, স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলছেন আমরাও দেখছি। এই হাসপাতালে অনেকগুলো উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। আমাদের এখানে ল্যাবে স্বল্প খরচে রক্তের পরীক্ষা করা হয়। মাত্র ৩ টাকা দিয়ে চোখের চিকিৎসা করানো যায়। এছাড়া বিনামূল্যে কফ পরীক্ষা ও যক্ষার চিকিৎসা করা হয়। রোগীর সেবায় কোন বিঘ্ন ঘটলে হেল্প ডেক্স নম্বরে অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়। বর্তমানে ০৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য টাইফয়েড ভ্যাকসিন কার্য্যক্রম চলমান আছে। হাসপাতালের সেবা ২৪ ঘন্টাই দেওয়া হয়। আমাদের এখানে খাবার পরিবেশনের মান খুবই ভালো।”

এদিকে বাউফল উপজেলা সরকারি হাসপাতালের চিত্র উল্টো। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রউফ খুব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন অনিয়ম ও দালালমুক্তকরনে। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম দুর্নীতি বা দালালদের দৌরাত্ম চরমে থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রথম সারির নেতারা বিভিন্নভাবে পরিদর্শন সহ বিভিন্ন সহযোগিতার কথা বললেও তা দেখা যায় না।

নাম না বলা শর্তে পাশের ফার্মেসি দোকানদার ও একাধিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, বাউফল সরকারি হাসপাতাল যেন এক মরন ফাঁদ। মানুষজন অসুস্থ হয়ে আসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। কিন্তু হাসপাতালে ঢুকলেই যেন চিকিৎসা আর হাসপাতালের নোংরা অবস্থা দেখে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের ভিতরে বিভিন্ন নষ্ট গন্ধে স্বজনরাও অসুস্থতার উপক্রম হন। হাসপাতাল মানুষের শেষ ভরসা কিন্তু হয় উল্টা। যদিও ডা. আব্দুর রউফ এসে একটু নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তবে দালালদের দৌরাত্ম চরমে। এর মধ্যেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রচারের পরেই দুর্নীতি দমন কমিশন সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

এবিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রউফকে প্রতিবেদককে বলেন, “বাউফল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী সংকট। শুধু একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আছেন তাকে এক বছরের বেশি হয় এখন পর্যন্ত বেতন দিতে পারছিনা। আর ক্লিনিক দালালদের দৌরাত্ম আছে সঠিক তবে এব্যাপারে আমি কঠোর অবস্থানে আছি। আগেও তাদের সর্তক করা হয়েছে আবারও সর্তক করা হবে। সবমিলিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে আপনাদের পরামর্শ চাই বলে জানান তিনি।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

গলাচিপা সরকারি হাসপাতালকে দালালমুক্ত করলেন ডা. মেজবাহউদ্দিন, বাউফল হাসপাতাল দালালে ভরপুর

আপডেট সময়: ০৪:৫০:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

এম জাফরান হারুন, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট গলাচিপা উপজেলা সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সেবার মান উন্নত করতে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মেজবাহ উদ্দিন। আর এরই অংশ হিসেবে তিনি হাসপাতালের মধ্যে বিচরণ করা দালালদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে দালালদের রোষানলেও পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু এতে তিনি দমবার পাত্র নন। রোগীরা যেন তার সবচেয়ে আপনজন। রোগীরা যাতে সঠিক চিকিৎসা সেবা পান সেজন্য তিনি হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মুল করতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে ডা. মো. মেজবাহ উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “হাসপাতালে কোন ধরনের দালালের দৌরত্ব এখন আর নেই। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর কঠোর হস্তে দালাল প্রতিহত করতে পেরেছি।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারি হাসপাতালে দালালের উপদ্রব সব যায়গায় কমবেশি থাকে। এখানেও ছিল, আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই চেষ্টা করছি এদের উপদ্রব কমানোর জন্য। পাশাপাশি নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি, স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলছেন আমরাও দেখছি। এই হাসপাতালে অনেকগুলো উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। আমাদের এখানে ল্যাবে স্বল্প খরচে রক্তের পরীক্ষা করা হয়। মাত্র ৩ টাকা দিয়ে চোখের চিকিৎসা করানো যায়। এছাড়া বিনামূল্যে কফ পরীক্ষা ও যক্ষার চিকিৎসা করা হয়। রোগীর সেবায় কোন বিঘ্ন ঘটলে হেল্প ডেক্স নম্বরে অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়। বর্তমানে ০৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য টাইফয়েড ভ্যাকসিন কার্য্যক্রম চলমান আছে। হাসপাতালের সেবা ২৪ ঘন্টাই দেওয়া হয়। আমাদের এখানে খাবার পরিবেশনের মান খুবই ভালো।”

এদিকে বাউফল উপজেলা সরকারি হাসপাতালের চিত্র উল্টো। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রউফ খুব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন অনিয়ম ও দালালমুক্তকরনে। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম দুর্নীতি বা দালালদের দৌরাত্ম চরমে থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রথম সারির নেতারা বিভিন্নভাবে পরিদর্শন সহ বিভিন্ন সহযোগিতার কথা বললেও তা দেখা যায় না।

নাম না বলা শর্তে পাশের ফার্মেসি দোকানদার ও একাধিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, বাউফল সরকারি হাসপাতাল যেন এক মরন ফাঁদ। মানুষজন অসুস্থ হয়ে আসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। কিন্তু হাসপাতালে ঢুকলেই যেন চিকিৎসা আর হাসপাতালের নোংরা অবস্থা দেখে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের ভিতরে বিভিন্ন নষ্ট গন্ধে স্বজনরাও অসুস্থতার উপক্রম হন। হাসপাতাল মানুষের শেষ ভরসা কিন্তু হয় উল্টা। যদিও ডা. আব্দুর রউফ এসে একটু নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তবে দালালদের দৌরাত্ম চরমে। এর মধ্যেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রচারের পরেই দুর্নীতি দমন কমিশন সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

এবিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রউফকে প্রতিবেদককে বলেন, “বাউফল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী সংকট। শুধু একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আছেন তাকে এক বছরের বেশি হয় এখন পর্যন্ত বেতন দিতে পারছিনা। আর ক্লিনিক দালালদের দৌরাত্ম আছে সঠিক তবে এব্যাপারে আমি কঠোর অবস্থানে আছি। আগেও তাদের সর্তক করা হয়েছে আবারও সর্তক করা হবে। সবমিলিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে আপনাদের পরামর্শ চাই বলে জানান তিনি।