০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউফলে ভূমি জরিপে ঘুষ আর দালালদের দৌরাত্ম; সাংবাদিকদের হাতে আটক দালাল

এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রমে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় দালাল চক্রের মাধ্যমে সেটেলমেন্ট অফিসার ও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসাররা ঘুষ আদায় করছেন এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাউফল ভূমি অফিসের ভেতরে হতদরিদ্র এক নারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় রাব্বি নামের এক দালালকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তিনি কৌশলে সরে যান।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালে শৌলা মৌজার ডিজিটাল জরিপ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি ধাপেই ভুক্তভোগীদের ঘুষ দিতে হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অফিসারদের সামনে নগদ ঘুষের টাকা দেখিয়েও অভিযোগ তোলেন।

অভিযুক্ত দালাল রাব্বি দাবি করেন, তিনি “ভূমি জরিপ ট্রেনিং” করেছেন। কিন্তু নিয়মিত অফিসে কী কাজে থাকেন—সেটির সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী রেজাউল করিম বলেন, রাব্বির হাতে কাগজ কিভাবে এলো তিনি জানেন না। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আব্দুস সালাম দাবি করেন, অভিযোগ ওঠা মৌজা তার অধীনে নয়। উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার আতিউর রহমান জানান, “রাব্বি আমার দপ্তরের বদনাম করেছে, তবে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই, জেলা কর্মকর্তাকে জানাব।”

জেলা সেটেলমেন্ট অফিসার নুসরাত জাহান খান মুঠোফোনে বলেন, “অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, এই ডিজিটাল ভূমি জরিপে শুধু রাব্বি একা দালাল নয়। রয়েছে ওতোপ্রোতভাবে ৪/৫ জন সক্রিয় দালাল। তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থাকে। তারা অফিসে বিকাল পর্যন্ত থাকে, সেখান থেকে আবার রাত গভীর পর্যন্ত অফিসারদের রুমে গিয়ে বিভিন্ন দালালি করে। তারা বিভিন্ন জমিদাতার থেকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিভিন্ন ভাবে টাকা পয়সা নেয়। তার কিছু অংশ অফিসারদের পকেটে যায়। আবার সেটেলমেন্ট অফিসারের সাথে থাকা সহযোগীরা জমিদাতাদের বিভিন্ন ভুলভাল বুঝিয়ে ডিসপোর্ট নামে এক জায়গারটা আরেক জায়গায় দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও ভোগান্তিতে ফেলে আসছে। যে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়ছে জমিদাতারা। এ যেন দুর্ভোগ ভোগান্তি আর হয়রানির আরেক নাম।

Tag:
আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

বাউফলে ভূমি জরিপে ঘুষ আর দালালদের দৌরাত্ম; সাংবাদিকদের হাতে আটক দালাল

আপডেট সময়: ০২:১১:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রমে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় দালাল চক্রের মাধ্যমে সেটেলমেন্ট অফিসার ও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসাররা ঘুষ আদায় করছেন এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাউফল ভূমি অফিসের ভেতরে হতদরিদ্র এক নারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় রাব্বি নামের এক দালালকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তিনি কৌশলে সরে যান।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালে শৌলা মৌজার ডিজিটাল জরিপ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি ধাপেই ভুক্তভোগীদের ঘুষ দিতে হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অফিসারদের সামনে নগদ ঘুষের টাকা দেখিয়েও অভিযোগ তোলেন।

অভিযুক্ত দালাল রাব্বি দাবি করেন, তিনি “ভূমি জরিপ ট্রেনিং” করেছেন। কিন্তু নিয়মিত অফিসে কী কাজে থাকেন—সেটির সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী রেজাউল করিম বলেন, রাব্বির হাতে কাগজ কিভাবে এলো তিনি জানেন না। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আব্দুস সালাম দাবি করেন, অভিযোগ ওঠা মৌজা তার অধীনে নয়। উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার আতিউর রহমান জানান, “রাব্বি আমার দপ্তরের বদনাম করেছে, তবে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই, জেলা কর্মকর্তাকে জানাব।”

জেলা সেটেলমেন্ট অফিসার নুসরাত জাহান খান মুঠোফোনে বলেন, “অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, এই ডিজিটাল ভূমি জরিপে শুধু রাব্বি একা দালাল নয়। রয়েছে ওতোপ্রোতভাবে ৪/৫ জন সক্রিয় দালাল। তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থাকে। তারা অফিসে বিকাল পর্যন্ত থাকে, সেখান থেকে আবার রাত গভীর পর্যন্ত অফিসারদের রুমে গিয়ে বিভিন্ন দালালি করে। তারা বিভিন্ন জমিদাতার থেকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিভিন্ন ভাবে টাকা পয়সা নেয়। তার কিছু অংশ অফিসারদের পকেটে যায়। আবার সেটেলমেন্ট অফিসারের সাথে থাকা সহযোগীরা জমিদাতাদের বিভিন্ন ভুলভাল বুঝিয়ে ডিসপোর্ট নামে এক জায়গারটা আরেক জায়গায় দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও ভোগান্তিতে ফেলে আসছে। যে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়ছে জমিদাতারা। এ যেন দুর্ভোগ ভোগান্তি আর হয়রানির আরেক নাম।