০২:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকদের মুখে হাসি

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র পাকা সোনালী ধানের সমারোহ। হেমন্তের মিষ্টি মিষ্টি রোদ আর মৃদু ঠান্ডা বাতাসে আমন ফসলের ক্ষেতে দোল খাচ্ছে কৃষকের মন ভরানো পাকা ধানের শীষ। দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠ চারিদিকে সোনালী পাকা ধান যেন রূপ পাল্টানো এক লীলভূমি। সবুজ বর্ণ থেকে সোনালী রং ধারন করছে পাকা ধান। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষক পরিবারে শুরু হবে নবান্নের উৎসব। পাকা ধান থেকে চাল তৈরী করে পিঠাপুলি আর পায়েস খাওয়ার অপেক্ষায় কৃষক পরিবারের সন্তানেরা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমন ফলনের বাম্পারের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের কৃষক কবির মৃধা বলেন, কোন ধরনের বন্যা বাদল না হলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে। মৃদু বাতাসে মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের দোলায় কৃষকদের মনে বয়ে যাচ্ছে অনাবিল আনন্দ আর নানা স্বপ্ন পূরনের আশা।

পটুয়াখালী জেলা কৃষিসম্প্রসার অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, ২০২৪-২৫/খরিফ -২ মৌসুমে রোপা আমন ফসল আবাদের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈরী আবহাওয়া মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১,১৬৫ হেক্টর কম হলেও কৃষকরা ১,৮৮,৯৫০ হেক্টর জমি আবাদ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ আবাদকৃত আমন ফসলের মধ্যে ১,৭,১২২ হেক্টর উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের এবং স্থানীয় জাতের আমন আবাদ হয়েছে ৭১৭৮৩ হেক্টর।

উপজেলা ওয়ারী আবাদের পরিমান হচ্ছে- সদর উপজেলায় উফশী আবাদ ১১০৪৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে ১৩২৯৮ হেক্টরে, বাউফলে উফশী আবাদ ১৮৬৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় আমন আবাদ হয়েছে ১৫৯৮৬ হেক্টরে, গলাচিপায় ২৭৫৫০ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৮৪৫৪ হেক্টরে, কলাপাড়ায় ২৩১৫৮ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৭৫৪০ হেক্টরে, দশমিনায় ১৩০৮১ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৫০৭৫ হেক্টরে, মির্জাগঞ্জে ১৪৩৫ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৮৬০০ হেক্টরে, দুমকিতে ৩০৯৫ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৩৫০৮ হেক্টরে এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১৯০৯৩ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে ৯৩২২ হেক্টর জমিতে।

কৃষিসম্প্রসার অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার সরকার জানান, এ বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও আবাদকৃত ১,৮৮,৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন ফসলের বাম্পার ফলনের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে ৫৪,৪৯২ মেঃ টন ধান বা ৩৬,৩৭৩ মেঃ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার দশমিনা, কলাপাড়া ও গলাচিপা এবং রাঙ্গাবালীতে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। এবার আমনের বাম্পার ফলনের কথা বলে দশমিনা উপজেলার আরজবাগীর কৃষক ছিদ্দিক হাওলাদার(৫৫) জানান, এই বছর দুই হেক্টরের কিছু বেশী আমন চাষ করেছি। ভাল ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৪.৫ মেঃ টন ধান হবে বলে আশা করি।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

পটুয়াখালীতে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকদের মুখে হাসি

আপডেট সময়: ১১:৩০:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র পাকা সোনালী ধানের সমারোহ। হেমন্তের মিষ্টি মিষ্টি রোদ আর মৃদু ঠান্ডা বাতাসে আমন ফসলের ক্ষেতে দোল খাচ্ছে কৃষকের মন ভরানো পাকা ধানের শীষ। দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠ চারিদিকে সোনালী পাকা ধান যেন রূপ পাল্টানো এক লীলভূমি। সবুজ বর্ণ থেকে সোনালী রং ধারন করছে পাকা ধান। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষক পরিবারে শুরু হবে নবান্নের উৎসব। পাকা ধান থেকে চাল তৈরী করে পিঠাপুলি আর পায়েস খাওয়ার অপেক্ষায় কৃষক পরিবারের সন্তানেরা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমন ফলনের বাম্পারের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের কৃষক কবির মৃধা বলেন, কোন ধরনের বন্যা বাদল না হলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে। মৃদু বাতাসে মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের দোলায় কৃষকদের মনে বয়ে যাচ্ছে অনাবিল আনন্দ আর নানা স্বপ্ন পূরনের আশা।

পটুয়াখালী জেলা কৃষিসম্প্রসার অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, ২০২৪-২৫/খরিফ -২ মৌসুমে রোপা আমন ফসল আবাদের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈরী আবহাওয়া মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১,১৬৫ হেক্টর কম হলেও কৃষকরা ১,৮৮,৯৫০ হেক্টর জমি আবাদ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ আবাদকৃত আমন ফসলের মধ্যে ১,৭,১২২ হেক্টর উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের এবং স্থানীয় জাতের আমন আবাদ হয়েছে ৭১৭৮৩ হেক্টর।

উপজেলা ওয়ারী আবাদের পরিমান হচ্ছে- সদর উপজেলায় উফশী আবাদ ১১০৪৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে ১৩২৯৮ হেক্টরে, বাউফলে উফশী আবাদ ১৮৬৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় আমন আবাদ হয়েছে ১৫৯৮৬ হেক্টরে, গলাচিপায় ২৭৫৫০ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৮৪৫৪ হেক্টরে, কলাপাড়ায় ২৩১৫৮ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৭৫৪০ হেক্টরে, দশমিনায় ১৩০৮১ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৫০৭৫ হেক্টরে, মির্জাগঞ্জে ১৪৩৫ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৮৬০০ হেক্টরে, দুমকিতে ৩০৯৫ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় ৩৫০৮ হেক্টরে এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১৯০৯৩ হেক্টরে উফশী ও স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে ৯৩২২ হেক্টর জমিতে।

কৃষিসম্প্রসার অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার সরকার জানান, এ বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও আবাদকৃত ১,৮৮,৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন ফসলের বাম্পার ফলনের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে ৫৪,৪৯২ মেঃ টন ধান বা ৩৬,৩৭৩ মেঃ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার দশমিনা, কলাপাড়া ও গলাচিপা এবং রাঙ্গাবালীতে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। এবার আমনের বাম্পার ফলনের কথা বলে দশমিনা উপজেলার আরজবাগীর কৃষক ছিদ্দিক হাওলাদার(৫৫) জানান, এই বছর দুই হেক্টরের কিছু বেশী আমন চাষ করেছি। ভাল ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৪.৫ মেঃ টন ধান হবে বলে আশা করি।