০২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে দেশের বাজারে বাড়ছে ইলিশের দাম

অপূর্ব সরকার,পটুয়াখালী: বাংলাদেশ থেকে ভারতকে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্তের পর দেশীয় বাজারে ইলিশ মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবছরই সীমিত পরিমাণে ইলিশ উপহার দেয়া হতো। তবে এ বছর সরকার ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। ফলে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে ইলিশের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী জেলার পৌর নিউমার্কেট মৎস্য বাজারে গিয়ে দেখা যায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেখা দিয়েছে। ফলে ইলিশের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। যেখানে কিছুদিন আগে এক কেজি ইলিশের দাম ছিল ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, বর্তমানে তা ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায় পৌঁছেছে। ১ কেজি ৫০০ গ্রাম বা দেড় কেজি মাছের দাম ১৮০০ টাকা। ২ টায় ১ কেজি মাছের দাম ১০৫০ টাকা। ঝাটকা – ৬৫০ টাকা। একদম ছোট ঝাটকা – ৫০০ টাকা করে চলছে।

দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক ক্রেতা জানান, “ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, তবুও আমরা এখন সেটা কেনার সামর্থ্য হারাতে বসেছি। এর দাম এত বেশি যে, এটি কিনতে গেলে সাধারণ পরিবারের বাজেটেই টান পড়ে।”

মাছ বিক্রেতা মোঃ খোকন বলেন, রপ্তানির কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ায় তারা বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর পাশাপাশি, ট্রান্সপোর্ট ও অন্যান্য খরচও বেড়েছে বলে জানান তারা। তবে ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে সরকার উদ্যোগ নিলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।

মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, মাছের সরবরাহ (যোগান) ও বাজারে ভোক্তার চাহিদার সমন্বয় না ঘটলেই বাজারে ছন্দপতন ঘটে। এদিকে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতির কারনে বিগত (২০-২৫) দিন গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ ছিল। তাই আলিপুর, মহিপুর বন্দরে মাছ কম এসেছে। তবে আবহাওয়া কিছুটা সাভাবিক হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যে বাজারে মৎস্য সরবরাহ বাড়বে। আশা করি খুব দ্রুত মূল্য হ্রাস পাবে। সকল শ্রেনীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে চলে আসবে ইলিশের বাজার। এছারা আপনারা জানেন “সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন হাত নেই, এখানে শুধু ভোক্তা ও সরবরাহকারীদের সমন্বয়ে বাজার দর ওঠা নামা করে”।

ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন তারা এবং অস্বাভাবিক মূল্যে বিক্রয়ের কোন প্রমাণ পেলে তারা আইন অনুযায়ী দোষীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

এ বিষয়ে এক মৎস্য আরোদদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ভারতে ইলিশ রপ্তানি বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এর ফলে দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করে, তবে ক্রেতাদের ভোগান্তি কিছুটা কমবে।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে দেশের বাজারে বাড়ছে ইলিশের দাম

আপডেট সময়: ১১:৫৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অপূর্ব সরকার,পটুয়াখালী: বাংলাদেশ থেকে ভারতকে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্তের পর দেশীয় বাজারে ইলিশ মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবছরই সীমিত পরিমাণে ইলিশ উপহার দেয়া হতো। তবে এ বছর সরকার ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। ফলে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে ইলিশের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী জেলার পৌর নিউমার্কেট মৎস্য বাজারে গিয়ে দেখা যায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেখা দিয়েছে। ফলে ইলিশের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। যেখানে কিছুদিন আগে এক কেজি ইলিশের দাম ছিল ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, বর্তমানে তা ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায় পৌঁছেছে। ১ কেজি ৫০০ গ্রাম বা দেড় কেজি মাছের দাম ১৮০০ টাকা। ২ টায় ১ কেজি মাছের দাম ১০৫০ টাকা। ঝাটকা – ৬৫০ টাকা। একদম ছোট ঝাটকা – ৫০০ টাকা করে চলছে।

দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক ক্রেতা জানান, “ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, তবুও আমরা এখন সেটা কেনার সামর্থ্য হারাতে বসেছি। এর দাম এত বেশি যে, এটি কিনতে গেলে সাধারণ পরিবারের বাজেটেই টান পড়ে।”

মাছ বিক্রেতা মোঃ খোকন বলেন, রপ্তানির কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ায় তারা বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর পাশাপাশি, ট্রান্সপোর্ট ও অন্যান্য খরচও বেড়েছে বলে জানান তারা। তবে ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে সরকার উদ্যোগ নিলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।

মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, মাছের সরবরাহ (যোগান) ও বাজারে ভোক্তার চাহিদার সমন্বয় না ঘটলেই বাজারে ছন্দপতন ঘটে। এদিকে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতির কারনে বিগত (২০-২৫) দিন গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ ছিল। তাই আলিপুর, মহিপুর বন্দরে মাছ কম এসেছে। তবে আবহাওয়া কিছুটা সাভাবিক হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যে বাজারে মৎস্য সরবরাহ বাড়বে। আশা করি খুব দ্রুত মূল্য হ্রাস পাবে। সকল শ্রেনীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে চলে আসবে ইলিশের বাজার। এছারা আপনারা জানেন “সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন হাত নেই, এখানে শুধু ভোক্তা ও সরবরাহকারীদের সমন্বয়ে বাজার দর ওঠা নামা করে”।

ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন তারা এবং অস্বাভাবিক মূল্যে বিক্রয়ের কোন প্রমাণ পেলে তারা আইন অনুযায়ী দোষীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

এ বিষয়ে এক মৎস্য আরোদদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ভারতে ইলিশ রপ্তানি বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এর ফলে দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করে, তবে ক্রেতাদের ভোগান্তি কিছুটা কমবে।