০৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোলায় আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জমি দখলের অভিযোগ!

মোঃ মহিউদ্দিন, ভোলাঃ ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লেচপাতা গ্রামে প্রকাশ্যে আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মোঃ হাসিম গংদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে হঠাৎ করেই চারপাশে বেড়া দিয়ে বাড়ির জমির মাঝখানে পাকা ভবন তুলতে জায়গা দখলে নেন লেচপাতা গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ হাসিম ও তার লোকজন।বিষয়টি জানতে পেরে জমির মালিক মোঃ হান্নান (৫২) ঘটনাস্থলে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় অভিযুক্তরা তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে ঐ স্থান থেকে সরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ৯৯৯ ফোন করলে দৌলতখান থানা থেকে পুলিশ এসে নির্মাণকাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে যায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লেজপাতা মৌজার জে. এল নং-২০, এস. এ খতিয়ানের ১নং খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত যার দাগ নং-১২৩৪ এবং মোট সম্প্রতির পরিমান ৬০ শতাংশ। ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক বাদী মোঃ হান্নান এবং বিবাদী মোঃ হাসিম গং উক্ত দাগের জমিতে উভয়ই একই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। যার মধ্যে বাদী হান্নানসহ ওয়ারিশ গনের জমির পরিমান ৩৩.৫ শতাংশ। অপরদিকে বিবাদী হাসিম গংদের জমির পরিমান ২৬.৫ শতাংশ।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, বিবাদীগন লোভে বশীভূত হইয়া ক্ষমতা ও শক্তির বলে আমাদের সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা করিতেছে এবং উক্ত সম্পত্তিতে থাকা বিভিন্ন গাছপালা কাটিয়া ফেলাসহ বিভিন্ন রকম ক্ষতি সাধন করিয়া আসিতেছে। উক্ত বিষয় নিয়া একাধিক বার শালিশ বিচারের মাধ্যমে মিমাংসা হইলেও তাহারা কাহারো কথায় কর্নপাত না করায় আমরা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। পরবর্তীতে আমাদের পক্ষে বিজ্ঞ আদালত থেকে রায় পাইলেও বিবাদীগন কিছুর তোয়াক্কা না করিয়া বর্তমানে আবারও আমাদের সম্পত্তিতে থাকা সুপারি গাছ কাটিয়া বসত ঘর নির্মাণের জন্য পাকা ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মে, ২০২৪ ইং তারিখ সকাল ৮ টার সময় বর্নিত বিবাদীগন আমার সম্পত্তিতে থাকা সুপারি গাছ কাটিয়া বসত ঘর নির্মাণ করার জন্য কাজ শুরু করিলে আমি দেখতে পাইয়া উক্ত বিষয় জিজ্ঞেস করিলে বর্নিত বিবাদীগন ক্ষিপ্ত হইয়া আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। আমি প্রতিবাদ করিলে বিবাদীগন আমাকে এবং আমার পরিবারের লোকজনকে খুন ও জখমসহ বিভিন্ন রকম ভয়-ভীতি দেখাইয়া হুমকি প্রদান করে।

উল্লেখ্য, বিবাদীদের বিরুদ্ধে জমি দখলের কারনে বাদী মোঃ হান্নানের বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম (৭৫) বাদী হয়ে ১ জানুয়ারী ১৯৮৯ সালে ভোলা আদালতের দৌলতখান কোর্টে একটি দেওয়ানী মামলা করেন যার নং.১/৮৯। দীর্ঘ দিন মামলাটি চলার পরে বিজ্ঞ আদালত চুল চেরা বিশ্লেষণ ও সাক্ষীদের জবানবন্দিতে ১৮/৭/১৯৯২ সালে মোঃ নুরুল ইসলাম গংদের পক্ষে রায় দেয়।

ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক বলেন, বাবা-মাসহ আমি অন্য বাড়িতে থাকি। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে খবর পাই আমাদের জায়গায় মোঃ হাসিম এর নেতৃত্বে শতাদিক লোক এসে জায়গা দখল করে পাকা ভবনঘর তুলছে। দ্রুত সেখানে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বললে আমাকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দৌলতখান থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে।

জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মোঃ হাসিম বলেন, “মোঃ হান্নান গংদের কোনো জায়গা আমি দখল করিনি। আমার ক্রয়কৃত জায়গায়ই আমি স্থাপনা নির্মাণ করতেছি।”

দৌলতখান থানার ওসি সত্য রঞ্জন খাসকেল জানান, “অভিযোগকারী ৯৯৯ ফোন করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।আদালতের রায়কে যদি অমান্য করে বিবাদী কাজ করে তা হলে কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন, পরীক্ষা বন্ধ, অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন 

error: Content is protected !!

ভোলায় আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জমি দখলের অভিযোগ!

আপডেট সময়: ১১:১৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

মোঃ মহিউদ্দিন, ভোলাঃ ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লেচপাতা গ্রামে প্রকাশ্যে আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মোঃ হাসিম গংদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে হঠাৎ করেই চারপাশে বেড়া দিয়ে বাড়ির জমির মাঝখানে পাকা ভবন তুলতে জায়গা দখলে নেন লেচপাতা গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ হাসিম ও তার লোকজন।বিষয়টি জানতে পেরে জমির মালিক মোঃ হান্নান (৫২) ঘটনাস্থলে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় অভিযুক্তরা তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে ঐ স্থান থেকে সরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ৯৯৯ ফোন করলে দৌলতখান থানা থেকে পুলিশ এসে নির্মাণকাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে যায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লেজপাতা মৌজার জে. এল নং-২০, এস. এ খতিয়ানের ১নং খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত যার দাগ নং-১২৩৪ এবং মোট সম্প্রতির পরিমান ৬০ শতাংশ। ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক বাদী মোঃ হান্নান এবং বিবাদী মোঃ হাসিম গং উক্ত দাগের জমিতে উভয়ই একই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। যার মধ্যে বাদী হান্নানসহ ওয়ারিশ গনের জমির পরিমান ৩৩.৫ শতাংশ। অপরদিকে বিবাদী হাসিম গংদের জমির পরিমান ২৬.৫ শতাংশ।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, বিবাদীগন লোভে বশীভূত হইয়া ক্ষমতা ও শক্তির বলে আমাদের সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা করিতেছে এবং উক্ত সম্পত্তিতে থাকা বিভিন্ন গাছপালা কাটিয়া ফেলাসহ বিভিন্ন রকম ক্ষতি সাধন করিয়া আসিতেছে। উক্ত বিষয় নিয়া একাধিক বার শালিশ বিচারের মাধ্যমে মিমাংসা হইলেও তাহারা কাহারো কথায় কর্নপাত না করায় আমরা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। পরবর্তীতে আমাদের পক্ষে বিজ্ঞ আদালত থেকে রায় পাইলেও বিবাদীগন কিছুর তোয়াক্কা না করিয়া বর্তমানে আবারও আমাদের সম্পত্তিতে থাকা সুপারি গাছ কাটিয়া বসত ঘর নির্মাণের জন্য পাকা ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মে, ২০২৪ ইং তারিখ সকাল ৮ টার সময় বর্নিত বিবাদীগন আমার সম্পত্তিতে থাকা সুপারি গাছ কাটিয়া বসত ঘর নির্মাণ করার জন্য কাজ শুরু করিলে আমি দেখতে পাইয়া উক্ত বিষয় জিজ্ঞেস করিলে বর্নিত বিবাদীগন ক্ষিপ্ত হইয়া আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। আমি প্রতিবাদ করিলে বিবাদীগন আমাকে এবং আমার পরিবারের লোকজনকে খুন ও জখমসহ বিভিন্ন রকম ভয়-ভীতি দেখাইয়া হুমকি প্রদান করে।

উল্লেখ্য, বিবাদীদের বিরুদ্ধে জমি দখলের কারনে বাদী মোঃ হান্নানের বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম (৭৫) বাদী হয়ে ১ জানুয়ারী ১৯৮৯ সালে ভোলা আদালতের দৌলতখান কোর্টে একটি দেওয়ানী মামলা করেন যার নং.১/৮৯। দীর্ঘ দিন মামলাটি চলার পরে বিজ্ঞ আদালত চুল চেরা বিশ্লেষণ ও সাক্ষীদের জবানবন্দিতে ১৮/৭/১৯৯২ সালে মোঃ নুরুল ইসলাম গংদের পক্ষে রায় দেয়।

ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক বলেন, বাবা-মাসহ আমি অন্য বাড়িতে থাকি। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে খবর পাই আমাদের জায়গায় মোঃ হাসিম এর নেতৃত্বে শতাদিক লোক এসে জায়গা দখল করে পাকা ভবনঘর তুলছে। দ্রুত সেখানে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বললে আমাকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দৌলতখান থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে।

জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মোঃ হাসিম বলেন, “মোঃ হান্নান গংদের কোনো জায়গা আমি দখল করিনি। আমার ক্রয়কৃত জায়গায়ই আমি স্থাপনা নির্মাণ করতেছি।”

দৌলতখান থানার ওসি সত্য রঞ্জন খাসকেল জানান, “অভিযোগকারী ৯৯৯ ফোন করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।আদালতের রায়কে যদি অমান্য করে বিবাদী কাজ করে তা হলে কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”