১০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে চিড়া-মুড়ি দিয়েই ত্রাণে ক্ষান্ত, খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্তরা

মোঃ মেহেদী হাসান (বাচ্চু), পটুয়াখালীঃ ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে গেলেও রেখে গেছে বহু ক্ষত, সেগুলো এখন দগদগে। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ৯৪৭টি পরিবারের বাড়িঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে। আর আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারের। দুর্গত পরিবারগুলোর প্রায় সব মানুষ এখন নানা অসুবিধার মধ্যে দিনযাপন করছেন। তাদের সবচেয়ে বেশি যেটি ভোগাচ্ছে, তাহলো খাদ্য সঙ্কট। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, রিমাল চলে যাওয়ার পর সহায়তা হিসেবে চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, দুইটি মোমবাতি, গ্যাসলাইট ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। তবে ওই চিড়া-মুড়িতে ক্ষুধা মিটছে না দুর্গত মানুষগুলোর।

২ জুন রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে, ৭২ বছরের কাশেম চৌকিদারের আর্তি, ‘বইন্যা মোর সবকিছু লইয়া গ্যাছে, এহন ক্যামনে বাইচ্চা থাকুম’। জানা গেলো, রিমালের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। আবুল কাশেম নামে আরেকজন জানান, ‘বইন্যার দিন বিয়াল (বিকেল) বেলা বউ আর নাতিকে ওয়াপদার উফড়ে থুইয়া ঘরের মালামাল আনতে গেলে, মুই যাইয়া আর কিছুই পাই নাই। নদীর জোয়াইরা পানিতে মোর বাড়ি ঘর হগল কিছু ভাষাইয়া লইয়া গেছে। ঘরে আধা বস্তা চাউল ছিল, তাও লইয়া গেছে পানিতে’। এছাড়াও ঘর-বাড়ি হারিয়ে তিন সদস্যের একটি পরিবার ঠাঁই নিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। বসে আছেন ঘরের খালি জায়গায় তক্তা পেতে। ত্রাণ সহায়তার কথা জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, ‘বইন্যার পর থেকে এহন তামাইত (পর্যন্ত) অল্পটু চিড়া আর গুড় পাইছি। আর কিছুই পাই নাই। আশে পাশের বাড়ি ঘর থাইক্যা কিছু খাওন (খাবার) দিছিল। এহন মুই কি দিয়া কি করমু। ঘরের চাউল কিনমু ক্যামনে আর ঘর তুলমু ক্যামনে’। রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. হাফিজুর রহমান জানান, বন্যার পর সহায়তা হিসেবে চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, দুই টি মোমবাতি, গ্যাসলাইট ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, গলাচিপা উপজেলায় ৯৪৭টি পরিবারের বাড়িঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার পরিবার। গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাস জানান, ত্রাণ এখনও আসে নাই। পাওয়া মাত্রই বিতরণ করা হবে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, আশেপাশে উপজেলার ত্রাণ আসলেও গলাচিপা উপজেলায় এখনও আসেনি।

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...

পটুয়াখালীতে ৩,৫৭০ কেজি জাটকা জব্দ; দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ

error: Content is protected !!

পটুয়াখালীতে চিড়া-মুড়ি দিয়েই ত্রাণে ক্ষান্ত, খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্তরা

আপডেট সময়: ১২:০২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

মোঃ মেহেদী হাসান (বাচ্চু), পটুয়াখালীঃ ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে গেলেও রেখে গেছে বহু ক্ষত, সেগুলো এখন দগদগে। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ৯৪৭টি পরিবারের বাড়িঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে। আর আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারের। দুর্গত পরিবারগুলোর প্রায় সব মানুষ এখন নানা অসুবিধার মধ্যে দিনযাপন করছেন। তাদের সবচেয়ে বেশি যেটি ভোগাচ্ছে, তাহলো খাদ্য সঙ্কট। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, রিমাল চলে যাওয়ার পর সহায়তা হিসেবে চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, দুইটি মোমবাতি, গ্যাসলাইট ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। তবে ওই চিড়া-মুড়িতে ক্ষুধা মিটছে না দুর্গত মানুষগুলোর।

২ জুন রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে, ৭২ বছরের কাশেম চৌকিদারের আর্তি, ‘বইন্যা মোর সবকিছু লইয়া গ্যাছে, এহন ক্যামনে বাইচ্চা থাকুম’। জানা গেলো, রিমালের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। আবুল কাশেম নামে আরেকজন জানান, ‘বইন্যার দিন বিয়াল (বিকেল) বেলা বউ আর নাতিকে ওয়াপদার উফড়ে থুইয়া ঘরের মালামাল আনতে গেলে, মুই যাইয়া আর কিছুই পাই নাই। নদীর জোয়াইরা পানিতে মোর বাড়ি ঘর হগল কিছু ভাষাইয়া লইয়া গেছে। ঘরে আধা বস্তা চাউল ছিল, তাও লইয়া গেছে পানিতে’। এছাড়াও ঘর-বাড়ি হারিয়ে তিন সদস্যের একটি পরিবার ঠাঁই নিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। বসে আছেন ঘরের খালি জায়গায় তক্তা পেতে। ত্রাণ সহায়তার কথা জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, ‘বইন্যার পর থেকে এহন তামাইত (পর্যন্ত) অল্পটু চিড়া আর গুড় পাইছি। আর কিছুই পাই নাই। আশে পাশের বাড়ি ঘর থাইক্যা কিছু খাওন (খাবার) দিছিল। এহন মুই কি দিয়া কি করমু। ঘরের চাউল কিনমু ক্যামনে আর ঘর তুলমু ক্যামনে’। রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. হাফিজুর রহমান জানান, বন্যার পর সহায়তা হিসেবে চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, দুই টি মোমবাতি, গ্যাসলাইট ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, গলাচিপা উপজেলায় ৯৪৭টি পরিবারের বাড়িঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার পরিবার। গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাস জানান, ত্রাণ এখনও আসে নাই। পাওয়া মাত্রই বিতরণ করা হবে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, আশেপাশে উপজেলার ত্রাণ আসলেও গলাচিপা উপজেলায় এখনও আসেনি।