০২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে কলাপাড়ার ডিঙ্গি নৌকার হাট

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শত বছরের ঐতিহ্য ডিঙ্গি নৌকা বেচা-কেনার হাটে বছরের বিভিন্ন মৌসুমে নৌকা বেচা-কেনা হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকে বেশি। কারিগররা এ সময়টাকে নৌকা তৈরীর মূল মৌসুম বলে মনে করেন। ক্রেতাদের চাহিদা মতো সব ধরনের নৌকা পাওয়া যায় এই হাটে। তবে বর্তমানে জৌলুস হারাতে বসেছে কলাপাড়ার নৌকা বেচা- কেনার হাট। এখন আর আগের মতো হাক-ডাক দিয়ে নেই বেচা-কেনা। কলাপাড়া পৌরশহরের লঞ্চঘাট এলাকায় আন্ধারমানিক নদীসংলগ্ন বিক্রি করেন বিক্রেতারা। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে নৌকা কেনার জন্য ক্রেতা সমাগম বেশি থাকে। এই বাজারে নৌকার দাম নির্ভর করে কাঠ ও সাইজের ওপর। জিলাপিগাছ, মেহগনি, চাম্বলগাছ দিয়েই বেশির ভাগ নৌকা তৈরি করা হয়। আড়াই-তিন হাজার থেকে শুরু করে চার-পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয় নৌকা। প্রতি সপ্তাহে এখানে প্রায় লাখ টাকার নৌকা বেচা-কেনা হয়। বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় মাছ শিকারের কাজে শত শত জেলে এ ডিঙ্গি নৌকা কেনেন। আমন বীজ সংগ্রহেও নৌকা ব্যবহার করেন কৃষকেরা। পানিতে প্লাবিত গ্রামের সাধারণ মানুষও যাতায়াতের জন্য ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করেছেন। উপকূলীয়দের মাঝে এখনো জনপ্রিয় বাহন হিসেবে পরিচিত ডিঙ্গি নৌকা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই এখানে নৌকা বেচা-কেনা চলে তবে মঙ্গলবার হাটের দিন ব্যস্ত সময় পার করেন নৌকা ব্যবসায়ীরা। কলাপাড়াতে নৌকা তৈরীর তেমন কারিগর না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নৌকা এনে এখানে বিক্রি করেন। একজন ডিঙ্গি নৌকা ব্যবসায়ী বলেন, “আমি ১২ বছর ধরে এখানে নৌকা বিক্রি করি। এই হাটে উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে জেলেরা নৌকা কিনতে আসেন । প্রতি মাসে আমি ৫০ থেকে ৬০ টি নৌকা বিক্রি করি। তবে বেচা-কেনায় আগের মতো জৌলুস নেই এখন আর। অন্য এক নৌকা ব্যবসায়ী আলী জানান, তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত। মূলত বংশপরম্পরায় তিনি এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন। তবে আগের চেয়ে এই হাটে নৌকার চাহিদা কমে গেছে। তাই বাড়িতেও তিনি নৌকা বিক্রি করেন বলে জানান। কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল হাওলাদার বলেন, “কলাপাড়ার নৌকার হাটটি শত বছরের পুরনো। পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতি বছর এ হাট ইজারা দেওয়া হয়। আগে এ হাটটি জমজমাট থাকলেও এখন নৌকার চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে হাটে নৌকার বেচা- কেনাও কম। তবে এটি কলাপাড়ার ঐতিহ্যবাহী একটি হাট।”

Tag:

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সেইভ করুন:

আমাদের সম্পর্কে জানুন:

South BD News 24

South BD News 24 is committed to publish the daily news of South Bengal based on authenticity, honesty and courage...
জনপ্রিয়

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে পটুয়াখালীর টাউন বহালগাছিয়া সঃ প্রাঃ স্কুলে চিত্রাংকন ও স্কুল ফিডিং অনুষ্ঠিত 

error: Content is protected !!

শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে কলাপাড়ার ডিঙ্গি নৌকার হাট

আপডেট সময়: ০৩:২৪:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শত বছরের ঐতিহ্য ডিঙ্গি নৌকা বেচা-কেনার হাটে বছরের বিভিন্ন মৌসুমে নৌকা বেচা-কেনা হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকে বেশি। কারিগররা এ সময়টাকে নৌকা তৈরীর মূল মৌসুম বলে মনে করেন। ক্রেতাদের চাহিদা মতো সব ধরনের নৌকা পাওয়া যায় এই হাটে। তবে বর্তমানে জৌলুস হারাতে বসেছে কলাপাড়ার নৌকা বেচা- কেনার হাট। এখন আর আগের মতো হাক-ডাক দিয়ে নেই বেচা-কেনা। কলাপাড়া পৌরশহরের লঞ্চঘাট এলাকায় আন্ধারমানিক নদীসংলগ্ন বিক্রি করেন বিক্রেতারা। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে নৌকা কেনার জন্য ক্রেতা সমাগম বেশি থাকে। এই বাজারে নৌকার দাম নির্ভর করে কাঠ ও সাইজের ওপর। জিলাপিগাছ, মেহগনি, চাম্বলগাছ দিয়েই বেশির ভাগ নৌকা তৈরি করা হয়। আড়াই-তিন হাজার থেকে শুরু করে চার-পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয় নৌকা। প্রতি সপ্তাহে এখানে প্রায় লাখ টাকার নৌকা বেচা-কেনা হয়। বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় মাছ শিকারের কাজে শত শত জেলে এ ডিঙ্গি নৌকা কেনেন। আমন বীজ সংগ্রহেও নৌকা ব্যবহার করেন কৃষকেরা। পানিতে প্লাবিত গ্রামের সাধারণ মানুষও যাতায়াতের জন্য ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহার করেছেন। উপকূলীয়দের মাঝে এখনো জনপ্রিয় বাহন হিসেবে পরিচিত ডিঙ্গি নৌকা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই এখানে নৌকা বেচা-কেনা চলে তবে মঙ্গলবার হাটের দিন ব্যস্ত সময় পার করেন নৌকা ব্যবসায়ীরা। কলাপাড়াতে নৌকা তৈরীর তেমন কারিগর না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নৌকা এনে এখানে বিক্রি করেন। একজন ডিঙ্গি নৌকা ব্যবসায়ী বলেন, “আমি ১২ বছর ধরে এখানে নৌকা বিক্রি করি। এই হাটে উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে জেলেরা নৌকা কিনতে আসেন । প্রতি মাসে আমি ৫০ থেকে ৬০ টি নৌকা বিক্রি করি। তবে বেচা-কেনায় আগের মতো জৌলুস নেই এখন আর। অন্য এক নৌকা ব্যবসায়ী আলী জানান, তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত। মূলত বংশপরম্পরায় তিনি এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন। তবে আগের চেয়ে এই হাটে নৌকার চাহিদা কমে গেছে। তাই বাড়িতেও তিনি নৌকা বিক্রি করেন বলে জানান। কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল হাওলাদার বলেন, “কলাপাড়ার নৌকার হাটটি শত বছরের পুরনো। পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতি বছর এ হাট ইজারা দেওয়া হয়। আগে এ হাটটি জমজমাট থাকলেও এখন নৌকার চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে হাটে নৌকার বেচা- কেনাও কম। তবে এটি কলাপাড়ার ঐতিহ্যবাহী একটি হাট।”