 
এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে একসঙ্গে সেই পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। কিন্তু জন্মের পর থেকেই সন্তানদের সঠিক যত্ন ও পুষ্টির যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অসহায় মা-বাবা। মুদি দোকানের সামান্য আয়ে এখন অর্থকষ্টে দিন কাটছে তাদের।
জানা গেছে, গত চলতি বছরের চলতি মাসের ৬ অক্টোবর-২৫ ইং দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে একসঙ্গে পাঁচ সন্তান জন্ম দেন লামিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূ। তিনি বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরাকাঠী গ্রামের সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী। স্থানীয় বাহেরচর বাজারে সোহেল হাওলাদারের একটি ছোট মুদি দোকান রয়েছে। এই দোকানের আয়েই চলে তাদের সংসার।
সোহেল হাওলাদার বলেন, “প্রতিদিন দুধ ও ন্যাপকিন কিনতে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। তাছাড়া শিশুরা অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। প্রতিদিন এত খরচ চালানো আমার পক্ষে অসম্ভব। স্ত্রী লামিয়া সন্তান জন্মের পর এখন শারীরিকভাবে দুর্বল। তার জন্যও পুষ্টিকর খাবার দরকার। কিন্তু সংসারের সীমিত আয়ে তা সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, “সন্তান প্রসবের পর হাসপাতালে নয় দিন থাকতে হয়েছে। ধার-দেনা আর এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ মিলিয়ে এখন প্রায় দুই লাখ টাকা দেনা হয়ে গেছে। সবকিছু সামলাতে গিয়ে আমি ভীষণভাবে হতাশ।”
সোহেলের শাশুড়ি শাহনাজ বেগম জানান, “আমার তিন নাতি ও দুই নাতনির নাম রাখা হয়েছে হাসান, হোসাইন, মোয়াজ্জেম, লাবিবা ও উমামা। সিজার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে এদের জন্ম হয়। অনেকে এসে দেখে গেছেন, সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সহযোগিতা করেননি। মা-মেয়ে মিলে সারাদিন বাচ্চাগুলোর যত্ন নিচ্ছি, এতে আমাদেরও শারীরিক কষ্ট হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সরকারি বা বেসরকারিভাবে যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে হয়তো এই নিষ্পাপ শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হবে।”
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রউফ বলেন, “নবজাতকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
বাউফল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, “আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। শুনেছি মা ও নবজাতকরা সুস্থ আছেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ ধরনের অসহায় পরিবারকে সহায়তার জন্য বিভিন্ন বরাদ্দ থাকে। তারা যদি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমার দপ্তরে আবেদন করেন, তবে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।”
 
																			 
																		 এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালীঃ
																এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালীঃ								 
 
             
















