রিপন মালী, বরগুনাঃ বরগুনায় ঘটে যাওয়া ধর্ষিতা মেয়ের ন্যায় বিচার চাওয়া মামলার তারিখে বাবার মৃত্যু। বিপদগ্রস্ত হিন্দু পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মানবতার পরিচয় দিয়ে তিনি দলীয় উদ্যোগে ওই পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আলোচিত ধর্ষণ মামলার ৭ দিন পর বাবা হত্যার ঘটনায় মানবিক কারনে মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে হিন্দু পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (১৭ই মার্চ ২০২৫) সকাল ১০ টায় ধর্ষিতা পরিবারের বাড়িতে গিয়ে এ ঘোষণা করেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। ধর্ষিতা পরিবারের বাড়ি থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, “মন্টু চন্দ্র দাস একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি একটি মুরগীর দোকানে দিনমজুরের কাজ করতেন। মেয়ে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আসামী গ্রেপ্তারও হয়েছে। এই পরিবারটি অসহায়। এই অসহায় পরিবারের আড়াই মাসের শিশু ১৮ বছর পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর ওপর ভরসা করে আমরা প্রতি মাসে এই পরিবারের দায়িত্ব নিলাম।”
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, কঠিন সময়ে আমীরের সহায়তা তাদের জন্য অনেক বড় আশীর্বাদ ছিল।
জামায়াতে আমীর বলেন, “মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মানবিক দায়িত্ব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সহায়তা করা উচিত।”
স্থানীয়রা তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং বলেন, এই ধরনের সহানুভূতি সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া উচিত ।
মন্টু দাসের বাড়ির পর তিনি বরগুনা টাউনহল মাঠে গিয়ে বক্তব্যে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে যে সকল ছেলে মেয়ে শহীদ হয়েছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের পাশে গিয়ে দাড়িয়েছে। সে যে দলের কিংবা ধর্মের সেটা দেখার বিষয় না। সে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে এ জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের পাশে ছিলো। সঠিকভাবে অসহায় পরিবারের দায়িত্ব পালনের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান পরিবারটির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তাকেও ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, ৪ মার্চ, ২০২৫ মন্টু চন্দ্র দাসের ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৫ মার্চ ২০২৫ বরগুনা সদর থানায় প্রতিবেশী সজীব চন্দ্র রায় ও তার ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মন্টু চন্দ্র দাস (৪০)। গত বুধবার (১২ মার্চ ২০২৫) সকালে বরগুনা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কড়ইতলা গ্রামের নিজ ঘরের পিছন থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মন্টু চন্দ্র দাসের স্ত্রী শিখা রানী (৩৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে বরগুনা সদর থানায় এজাহার মামলা দায়ের করে।