মো. রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী: আবারও শিক্ষক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) পিওটু প্রোভিসি মো: শামসুল হক ওরফে রাসেলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্ত রাসেল মারামারির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় আজ রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেছে শিক্ষার্থীরা এবং বেলা ১২ টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ ও নিন্দা মিছিল বের হয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ইতিপূর্বে রাসেলের হাতে লাঞ্ছিত হওয়া এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের বারবার লাঞ্ছিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়ায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য তা বিশাল সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই বিচার এখন আল্লাহর কাছে দিয়ে রেখেছি। এছাড়াও তিনি আরও বলেন, কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তাদের প্রশ্রয়ে বারবার সে (রাসেল) শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার সাহস পায়।
অভিযুক্ত শামসুল হক রাসেল এই সাউথ বিডি নিউজ ২৪ কে বলেন, শেখ তানজিলা দোলা আমার এলাকার ছোট বোন। তাঁর সাথে নজরুলের (ভুক্তভোগী শিক্ষক) বিভাগীয় বিষয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে নজরুল আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট ভাই। আসলে সেই ছোট ভাইয়ের দাবি নিয়েই নজরুলকে দোলার সাথে কোনো ঝামেলা না করার জন্য আমি অনুরোধ করি। কিন্তু সে শিক্ষক আর আমি অফিসার হওয়াতে বিষয়টি সে স্বাভাবিকভাবে না নিয়ে উল্টো উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এজন্য তাঁর সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ বলেন, ঘটনা পরবর্তী ভুক্তভোগী শিক্ষক মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করেছেন। সে মোতাবেক আমরা আজ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি এবং অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত না করা পর্যন্ত আমাদের (শিক্ষকদের) ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত জানান, দাপ্তরিক কাজে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বারবার শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় অভিযুক্ত রাসেলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নিকট লিখিত অভিযোগে ফুড এন্ড নিউট্রেশন সায়েন্স অনুষদের পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি এন্ড মার্কেটিং বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষক নজরুল ইসলাম দাবি করেন, রাসেল শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) কৃষিকুঞ্জের ডাইনিং কক্ষে অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ এবং উপস্থিত অন্য শিক্ষকদের সামনেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরবর্তীতে সে(রাসেল) তাঁকে জীবননাশের হুমকিও দেয়।
অপর দিকে ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন মাস্টাররোল কর্মকর্তা মোঃ শামসুল হক ওরফে রাসেল মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন মন্ডলকে লাঞ্ছিত করছেন। এছাড়াও মাসে ৪৫ দিনের বেতন নেওয়া, নিয়মিতভাবে অফিস না করাসহ নানা বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।