সুনীল সরকার পটুয়াখালী: শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার ২ নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে দাদার বাড়ি থেকে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিশোরীর খালাসহ অন্যান্যদের দাবি তাকে ধর্ষনের পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর ধরে মাতৃহারা ঐ কিশোরী তার দাদী রোকেয়া বেগমের সাথে বসবাস করেছিলো। গতকাল সন্ধ্যায় তার দাদী তাকে বাসায় একা রেখে পান খাওয়ার জন্য অন্য বাসায় চলে যান। তখন ঐ শিক্ষার্থী পড়ার টেবিলে ছিলো এবং তার কয়েক ঘন্টা পর দাদী বাসায় আসলে ফ্যানের সাথে ঝুলতে থাকা অবস্থায় তার লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
ঐ কিশোরীর খালা উপমা পারভিন খাদিজা বলেন, আমার বোনের মেয়ে আত্মহত্যা করেনি বরং তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বেশ কয়েকমাস যাবত তার ফুফাতো ভাই সাকিল ও সাজিত বিভিন্নভাবে তাকে যৌন হয়রানি করে আসছিলো। তারা একদিন গোপনে তার গোসল করার ভিডিও ধারন করে তাকে ব্লাকমেইল করে যৌন হয়রানী করতো। এছাড়া বাড়ির সামনে শামীম নামের এক ব্যক্তিকে পড়াশোনায় সাহায্য করতে বলায় তিনিও পড়া বোঝানোর উছিলায় তাকে যৌন হয়রানি করতেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে মেয়েটি অভিযোগ করলেও তার দাদী কোন গুরুত্ব না দিয়ে বরং তাকেই উল্টো ভর্ৎসনা করতেন বলে অভিযোগ করেন উপমা।
উপমা আরো জানান, ২০১৮ সালে মালয়েশিয়া বসে তার বোনকে হত্যা করে ১২ টুকরো করে তিনটি ব্যাগে ভরে লাশ বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন তার স্বামী সাজু। এ ঘটনায় তার ২০ বছরের সাজা হয়। এর পর থেকে মুগ্ধ তার কাছেই থাকতেন। দেড় বছর আগে অপারগ হয়ে থানার মাধ্যমে মুগ্ধকে তার দাদীর জিম্মায় দেয়া হয়। এর পর থেকে তার বোনের মেয়ে বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে তার ফুফাতো ভাইদের বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলতো এবং তার দাদীর কথাও বলতো আর কান্না করতো। গতকাল বিকেলে মামাতো ভাই আশিকুল ইসলাম সিয়ামের সাথে মুগ্ধর কথা হয়েছে। তখন মুগ্ধ বলেছে দাদী তাকে পাশের বাড়ি থেকে বই আনতে বলেছেন। আবার রাত ২টার সময় দাদী রোকেয়া বেগম ফোন দিয়ে বলে সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। বিকেলে তিনি পান খেতে গিয়ে কখন ফিরেছেন? কখনইবা তিনি লাশ দেখতে পেয়েছেন? কেন পুলিশ ও অন্যান্যদের খবর জানাতে দেরী হল? সে সময়ে কি করা হয়েছিল? এসব প্রশ্নের জবাব চান উপমা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবি করেন তিনি। তবে এবিষয়ে তার দাদী রোকেয়া বেগমকে একাধিক বার কল দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ শামীম হাওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্নহত্যা।