• বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন |
  • English Version
শিরোনাম :
চাঞ্চল্যকর হ*ত্যা মামলার প্রধান আসামী পলাতক গোবিন্দ ঘরামী র‍্যাবের হাতে গ্রে*ফতা*র বরগুনায় জাকের পার্টির বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে সরকারি যাত্রীছাউনি দখল করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ প*রকি*য়া প্রেমে বাঁধা দেয়ায় স্বামীকে বি*ষ খাইয়ে হ*ত্যা; প্রধান অভিযুক্ত আকলিমা ও কথিত প*রকি*য়া প্রেমিক নেসার র‍্যাব এর হাতে গ্রে*ফতা*র সাংবাদিক আব্দুস সালাম আরিফের পিতার জানাজায় মানুষের ঢল পটুয়াখালীতে সাতাঁর প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত  যে ইউনিয়ন পরিষদে ২০ বছরেও বসেনি কোনো চেয়ারম্যান-মেম্বার, তবে অ*পক*র্মের রাজ্যস্থল বাউফলে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনামূলক সভা অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে ব্যবসায়ীর কোমরে পি*স্তল সদৃশ ঠেকিয়ে চাঁ*দা দাবি; গ*ণধো*লাই দিয়ে যুবককে পুলিশে সোপর্দ গৌরনদীতে জামাতের নির্বাচনী গণসংযোগ অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে সাবিনা আক্তার মাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়মের তদন্ত শুরু

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ / ২৩৮ বার পড়া হয়েছে
Update : বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর সাবিনা আক্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তালেবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষক ও কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকমল হোসেন বুধবার বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

এদিকে, বুধবার দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক আবু তালেবের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, আবু তালেব ২০১২ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, শিক্ষার্থীদের বেতন, উপবৃত্তি ও টিউশন ফিসহ নানা তহবিলের ২০ লক্ষাধিক টাকা , ল্যাপটপ, হোয়াইট বোর্ডসহ নানা উপকরণ আত্মসাৎ করেছেন।

তিনি গত ১২ বছরে বিভিন্ন তহবিলের ৩২ লাখ ২৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফি বাবদ ৯ লাখ টাকা, মার্কশিট, প্রশংসাপত্র, প্রবেশপত্র ও সার্টিফিকেট বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত ৮ লাখ টাকা, উপবৃত্তি বাবদ ২ লাখ, উপবৃত্তির পিন কোড দিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে ২১ হাজার টাকা, ২০২৪ সালের ৮ম-৯ম শ্রেণী পর্যন্ত রেজিষ্ট্রেশন বাবদ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা, শিক্ষার্থী ভর্তি ফি বাবদ ৬-১০ শ্রেণী (২ বছরের) ২ লাখ টাকা ও টিউশন ফি বাবদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তিনি শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে তার পক্ষের শিক্ষকদের সপ্তাহে ৯-১০ টি পিরিয়ড আর প্রতিপক্ষের শিক্ষককদের ৩০-৩২ টি পিরিয়ড দিয়ে হয়রানি করেন।

তিনি বিদ্যালয়ের সকল ধরনের আয়ের টাকা নিজে গ্রহন করে আত্মসাৎ করেন, শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল দেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেন, শিক্ষার্থী ভর্তি বাবদ ৭৫০ থেকে ১ হাজার টাকা নেন, এসএসসি পরীক্ষার ফর্ম পূরনে দেড় হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ফি গ্রহন করেন আবার প্রবেশপত্র বিতরণকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৬০০ টাকা নেন।

গরীব, মেধাবী ও ক্লাসে উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে সরকার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে থাকে। কিন্তু এসব বিষয় বিবেচনায় না রেখে আর্থিক লেন-দেনের মাধ্যমে নিজের ইচ্ছামত উপবৃত্তি দিয়ে থাকেন। এছাড়াও, তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক (তুই-তুকারি) করেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের বিএড ও উচ্চতর স্কেল দেয়ার জন্য মোটা অংকের ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়। সহকারী শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছ থেকে উচ্চতর স্কেল করার জন্য ৫০ হাজার টাকা, বিলকিস নাহারের কাছ থেকে ৩৭ হাজার টাকা, আফরোজা বেগমের কাছ থেকে বিএড স্কেল করাতে ৩০ হাজার টাকা, ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহিমের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নেন।

টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে নানাভাবে হয়রানী করা হয়। টাকা না দেয়ায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সহকারী শিক্ষক অনিমেশ চন্দ্র সরকারের ১৫ দিনের বেতন কর্তন করা হয়।

তিনি ১০ বছরেও ম্যানেজিং কমিটির কোন সভা করেননি। রেজুলেশন খাতায় আলোচ্য বিষয় না লিখে শিক্ষক প্রতিনিধিদের অনেকগুলো স্বাক্ষর একসাথে দিতে বাধ্য করেন। শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন শীটে প্রতিমাসে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষকের রক্তচক্ষুর রোষানলে ১২ মাসের স্বাক্ষর একসাথেই দিতে হয়। প্রধান শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না, শ্রেণী কক্ষে পাঠদানে অংশগহন করেন না, শিক্ষক হাজিরা খাতায় একসাথে অনেকগুলো স্বাক্ষর ও অযৌক্তিক কারণ দর্শান।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আবু তালেব জানান, কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। যাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছে তারা তদন্ত করে দেখুক। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত আরা উর্মি জানান, শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করানো হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর পড়ুন: