মো. রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর দুমকীতে পড়াশুনার পাশাপাশি অনাবাদি পতিত জমিতে মোঃ মাইনুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বিভিন্ন জাতের শাক-সবজির বাগান, মাছ ও গরুর খামার গড়ে তুলেছেন।
সে উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আ: ছালামের ছেলে এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজে রাস্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
শুক্রবার(১৬ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিনে গিয়ে মাইনুলের সমন্বিত বাগানে গিয়ে দেখা যায়, উচ্চ ফলনশীল বাবু জাতের পেঁপে, বারি-১২ বেগুন, লাল জাতের নিজের উদ্ভাবিত তাল বেগুন, সাদা বেগুন, দেশী জাতের সুগন্ধি ঘৃত কুমারী বোম্বাই মরিচ, মেঘা জাতের টমেটো, সীম, ময়না ও নবাব লাউ, বারমাসি কাজী পেয়ারা, কাগজী লেবু দুলছে গাছে গাছে। এছাড়াও বাগানের মাঝখানে মাছ চাষের জন্য তৈরি করেছেন পুকুর। ওই পুকুরে রুই, কাতল, তেলাপিয়া, কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেছেন তিনি। সবজি বাগানে প্রাকৃতিক ভাবে ফাঁদ পেতে কীট পতঙ্গ নিধনের ব্যবস্থা করেছেন। অপরদিকে বাসার সামনে রয়েছে তার গরুর খামার। দুটি গাভী থেকে মাসে গড়ে ২৫ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করেন এবং গরুর গোবরে চাষ করা কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করে মাসে তার আয় হয় ১০ হাজার টাকার ওপরে।
আলাপকালে মাইনুল বলেন, ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার ফাঁকে বাবার কৃষি কাজে সাহায্য করতাম। ৩ বছর আগে নিজ উদ্যোগে বাবার ২৫ শতাংশ পতিত জমিতে প্রথমে সবজি চাষ করি। নিজে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো) সার তৈরি করে বাগানে প্রয়োগ করি এবং প্রাকৃতিকভাবে বালাই নাশক তৈরি করে এবং ফাঁদ পেতে কীটপতঙ্গ নিধন করি। ফলে শুধু গত সিজনেই ৩৫ টি পেঁপে গাছ থেকে আমি দু’লক্ষ টাকা আয় করেছি।
এব্যাপারে একই গ্রামের কৃষক আবুল কালাম মৃধা বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি শ্রম দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া মাইনুল এখন অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য প্রেরণার মাইল ফলক। ওর বাগান থেকে বিভিন্ন জাতের বীজ ও চারা নিয়ে আমরা অনেকেই সবজি বাগান করে লাভবান হচ্ছি।
মাইনুলের বাবা আ: ছালাম বলেন, এগুলো দেখতে যখন উর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তা ও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা আসেন তখন আমার খুবই ভালো লাগে। আগামীতে আরো ১৫ শতাংশ জমি সবজি চাষের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শামীম খানের উৎসাহ, পরামর্শ ও তদারকিতে ইতিমধ্যে মাইনুল সমন্বিত সবজি চাষে বিভিন্ন সময় কৃষি অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তায় পরিনত হয়েছে।