ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত ও আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান নিউ নিউ খেইন। সম্প্রতি নিউ নিউ খেইন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির একজন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিউ নিউ খেইন এর পিতা অ থুন অং জাঁ যিনি থনজয় মাস্টার নামে পরিচিত ছিলেন সর্ব মহলে। থনজয় মাষ্টার পেশায় ছিলেন সমাজ সেবক এবং একজন আদর্শ শিক্ষক।
নিউ নিউ খেইন এর পিতার রাজনৈতিক পরিচয় খুজতে গিয়ে জানা যায় তিনি বৃটিশ আমল থেকেই সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করতেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন তিনি। পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় এবং নিবেদিত প্রাণ সদস্য হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন থনজয় মাষ্টার। হীরালাল দাস গুপ্ত, নৃপেন সেন, সুকুমার সেন ও সুধাংশু সরকার এর সংস্পর্শে রাজনীতিতে প্রথম পা রাখেন তিনি। বাখেরগঞ্জ জেলা কৃষক সমিতির সেক্রেটারিও ছিলেন থনজয় মাষ্টার। এছাড়া খুলনায় অনুষ্ঠিত নিখিল বাংলা সন্মেলনে বরিশাল জেলা প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে যোগদান করেন নিউ নিউ খেইন এর পিতা। থনজয় মাষ্টার নিখিল ভারত কৃষক সভার অন্যতম সদস্য হিসেবে কৃষক সভার সভাপতি কমরেড মোজাফফর আহমদ, কমরেড মনসুর হাবিব, কমরেড ভবানী সেন, কমরেড মণি সিং প্রমুখের সান্নিধ্যে কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ১৯৫১- ৫২ সাল (ভাষা এবং মুসলিম লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলন) এর কলাপাড়া থানা সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সহ-সভাপতি ও জেলা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের অন্যতম কর্মী ফ্রন্টের বিশিষ্ট নেতা চাখার কলেজের প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, যুক্তফ্রন্টের এমপি আব্দুল করিম, চট্টগ্রামের পূর্ণেন্দু দস্তিদার এমপি (জেল থেকে নির্বাচিত) এর সাথে গ্রেফতার হয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে বিনা বিচারে অনেকদিন আটক ছিলেন। ১৯৭১ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের পর কলাপাড়া এবং আমতলী নির্বাচনী এলাকার সংগ্রাম কমিটির দপ্তর সম্পাদকেরও দায়িত্বে ছিলেন থনজয় মাষ্টার। সংগ্রাম কমিটির সর্বোচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৫ সদস্যের সুপ্রিম কমান্ডের অন্যতম সদস্য হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। থনজয় মাষ্টার মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহযোগিতা করার জন্য কলাপাড়া বন্দরে হানাদার বাহিনী যে কোন সময়ে উপস্থিত হয়ে হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে জেনেও কোথাও পালিয়ে না গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপস্থিত থেকে মুক্তি যোদ্ধাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্রাপ্ত যাবতীয় দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন। এমনকি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন নিউ নিউ খেইন এর পিতা থনজয় মাষ্টার।
এক সাক্ষাৎকারে নিউ নিউ খেইন বলেন, “আমার পিতা থনজয় মাষ্টার যেমন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শে উজ্জীবীত ছিলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেমন মানুষের সেবা করেছেন, ঠিক তেমনি আমি আমার পিতাকে অনুসরণ করে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। তাই, যতদিন বাঁচবো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শকে বুকে লালন করে এবং তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুগ্রহ নিয়ে গরীব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের সেবা করে যাবো। জাতির পিতার আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে যদি জীবনকে উৎসর্গ করতে হয়, তাতেও আমি প্রস্তুত।”