ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পটুয়াখালীর ঝাউতলায় শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫ টায় কয়েকশ উৎসুক জনতার সামনে পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ও পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ উদ্বোধন করলেন বহুল আলোচিত পটুয়াখালীর সেই হেলিকপ্টার এর আদলে বানানো হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টটি।
জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলাধীন ছোটবিঘাই ইউনিয়নের কাজীর হাট বাজারের ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি মোঃ মেহেদি হাসান ও তার দুই বন্ধু আরিফ ও আল-আমিন প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে নিজেদের ওয়ার্কশপে এবং নিজেদের হাতেই দীর্ঘ ৭ মাসের প্রচেষ্টায় নির্মাণ করেন হেলিকপ্টার এর আদলে এই রেস্টুরেন্টটি। মেহেদি হাসান যখন এটির পরিকল্পনা করেন, তখন তার পরিবার তাকে সম্মতি দেয়নি। প্রতিবেশীরা অনেকে পাগল বলেও মেহেদিকে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে এবং একটু একটু করে যখন মেহেদি কাজীর হাট বাজারের একটি মাঠে হেলিকপ্টারটি বানাতে ও আকৃতি দিতে শুরু করলেন, তখনই সাড়া পড়ে গেলো চতুর্দিকে। দৈনিক দেশবার্তার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ও পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য মোঃ ফরিদ উদ্দিন যখন প্রথম নির্মাণাধীন এই হেলিকপ্টারটির একটি ভিডিও ধারন করে তার নিজ ফেইসবুক পেইজে আপলোড করেন, ঠিক তার পর থেকেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ এবং ইউটিউবারগণ বিভিন্ন সময়ে এটি নিয়ে নিউজ করতে থাকেন। এর পরই শুরু হয়ে যায় এটি নিয়ে আলোচনা। দেশজুড়ে দারুণ সাড়া পড়ে যায় মেহেদির এই নতুন উদ্যোগটির। কাজীর হাট বাজারেই প্রতিদিন শত শত মানুষ ভীড় করতে থাকে হেলিকপ্টারের আদলে বানানো এই রেষ্টুরেন্টটি এক নজর দেখার জন্য। এখন তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব সহ সকলেরই প্রশংসায় ভাসছেন মেহেদি ও তার দুই বন্ধু আরিফ ও আল-আমিন।
হেলিকপ্টারটির ভিতরে মোট ২১ জনের বিলাশবহুলভাবে বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এই হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের স্বপ্নদ্রষ্টা মেহেদি হাসান জানান, এখানে প্রতিদিন ৩৬৫ ধরনের খাবারের আইটেম থাকবে। তিনি এটিকে নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নিয়ে যাবেন এবং মানুষকে খাবার পরিবেশন করবেন। এটি তার দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন যে তিনি এটিকে নিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘুরে দেখবেন এবং এটি সারা বাংলাদেশের মানুষকে দেখাবেন।
পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ও পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মেহেদির মত এমন উদ্যেগতাই আমরা চাই। এটি পটুয়াখালীর জন্য একটি গর্বের বিষয়। মেহেদিকে সব ধরনের সহযোগীতা আমরা অব্যাহত রাখবো।
হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টটি দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, একজন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি যে এত সুন্দর করে আসল হেলিকপ্টার এর মতই দেখতে একটি হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট বানিয়েছে, এতে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। মেহেদির এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগতম জানাই। আসলে সে আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।