1. info@www.southbdnews24.com : 𝐒𝐨𝐮𝐭𝐡 𝐁𝐃 𝐍𝐞𝐰𝐬 𝟐𝟒 :
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বাউফলে দু*র্বৃত্তের দেয়া আ*গুনে পু*ড়ে ছাই গরু-ছাগলসহ অর্ধশত হাঁস-মুরগি পটুয়াখালীতে বিয়ে নিয়ে কথা কা*টাকা*টি; সংঘ*র্ষে নিহ*ত-১; গ্রে*ফতার-১ বাউফলে খেড়ের কুড়ের পাশে নিখোঁজ যুবকের লা*শ পটুয়াখালীতে হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে ভূমি উপ-সহকারি বাপ্পির মৃত্যুতে দোয়া ও স্মরনসভা অনুষ্ঠিত  বাউফলে সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ ‘বাউফল সাংবাদিক ক্লাব’ এর কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে পটুয়াখালীতে ইমাম পরিষদের সংবাদ সম্মেলন  বাউফলে সেই সংঘ*র্ষে আ*হ*ত বৃদ্ধের অবশেষে মৃ*ত্যু পটুয়াখালীতে বিভিন্ন আয়োজনে মহান মে দিবস পালিত

আসুন, প্রকৃতিকে জয় করি, পৃথিবীকে বাঁচাই

মাসুূদ আলম বাবুলঃ
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২২৩ বার পড়া হয়েছে

মানুষ একসময় ছিলো প্রকৃতির কাছে অসহায়, তার অজ্ঞানতাই তাকে এই অসহায়ত্ব দান করেছে। তাই সে নিরুপায় হয়েই স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করতো। প্রাকৃতিক ভাবে সেই প্রার্থনা কাজে আসলে সে তার স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ হতো, নয়তো মনে করতো সৃষ্টিকর্তা বুঝি তাদের প্রতি অনেক বেশি রাগ করে আছে, তাই সেই ভঙ্গুর অসহায়ত্বের মধ্যেই সে তার স্রষ্টার আরো বেশি নৈকট্য লাভের চেষ্টা করতো।

বিষয়টা এরকম যে, অফিসের বস আপনার প্রতি খুব রেগে থাকলে, আপনি প্রথম তাকে সবিনয় অনুরোধ করলেন। কাজ হয়ে গেলে আপনি স্বাভাবিক জীবনে চলে আসলেন, নয়তো তার রাগ নিরসনের জন্যে আপনি তাকে আরো বেশি তোয়াজ করতে থাকবেন। প্রকৃতির সন্তান মানুষের জীবন ঠিক এরকমই। একদল জীবনের ভয় সমস্যা সমাধানের জন্যে নানান রকম চেষ্টা করতে থাকে কোনো কারন অনুসন্ধান ছাড়াই, আরেকদল সবকিছুরই কারন সমস্যা ও সমাধানের বাস্তব পথ খুঁজতে থাকে।

এ নিয়ে অনেক আলোচনা থাকলেও প্রাসঙ্গিক বিষয় দিয়েই শেষ করি। আগে আবহাওয়া সম্পর্কীত প্রযুক্তিবিদ্যা, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান খুব সীমিত থাকায় তারা ছিলো অজ্ঞেয়। নদীপথে গতিপথে নানান কারনে হরহামেশা নৌ দুর্ঘটনা ঘটতো এখন তা অনেক কমে এসেছে, উন্নত জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেমের কারনে। আগের যুগে মানুষ জানতো না ঝড় কখন হবে বৃষ্টি কখন হবে? স্বভাবতই কিছু মানুষ অদৃষ্টকে দায়ি করতেন। যে যার ধর্মমতে স্রষ্টাকে ডাকতেন। কিন্তু যারা এই অদৃষ্টের শিকলে বন্দি না থেকে, কারণ এবং তার সমাধান খুঁজেছেন, তারাই কোনো না কোনো ভাবে সমাধান এই প্রকৃতির কাছ থেকেই নিয়েছেন। ক্রমান্বয়ে তারা উন্নত থেকে উন্নততর টেকনোলজির উদ্ভাবন ঘটাতে থাকে। যা ব্যবহার করে এখন তারা সবকিছুই ঠিকঠাক বলে দিতে পারেন। কখন কোন ঝড় কতো বেগে কোন দিক দিয়ে আসছে, কোন দিকে যাচ্ছে, তার পূর্বাভাসের খুব একটা হেরফের হচ্ছে না। তাই যেকোনো সাইক্লোনকে মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও প্রারম্ভিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তেমনি বৃষ্টি এই প্রকৃতিরই ফসল। সূর্যতাপ সহ নানান কারনে বাষ্পিভূত পানি আকাশে ভেসে বেড়ায়, এবং তা ঘনিভূত হয়ে একসময় জলকনা রূপে বৃষ্টি হয়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। এই প্রাকৃতিক সাইক্লিক অর্ডারের সাথে প্রার্থনার কোন সম্পর্ক নেই। বরং প্রার্থনা নয়, মানুষ চাইলে এই বৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তার উদ্ভাবিত জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি দিয়ে ।

২০০৮ সালে চীনে অলিম্পিক খেলার সময় তুমুল বৃষ্টি হবে জানালেন আবহাওয়া বিভাগ। চীনারা প্রার্থনায় না বসে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত চীনা বিজ্ঞানীরা তাদের জ্ঞান বিজ্ঞান দিয়ে তিনদিন আগেই আশপাশের সব মেঘ থেকে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে খেলার দিন সকল মাঠ বৃষ্টিমুক্ত রাখলো। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ মরু এলাকায় এখন চাইলেই ক্লাউড সিডিং সিস্টেমে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারছে। তাই মানুষ চাইলে যেমন বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে, না চাইলে নিয়ন্ত্রণও করতে পারে। বৃষ্টির জন্যে ইস্তিসকার নামাজ, পূণ্যিপুকুর ব্রত, তালতলার শিন্নি, কাদা মাখানি, হুদু্মদ্যাও বা মেঘ পূজা, হুদমা গান, কুলানামানি, ব্যাঙের বিয়ে ইত্যাদি সকলই লোকাচার; অজ্ঞতা এবং ভণ্ডামি।

অদৃষ্টবাদী মানুষ কখনোই ইনোভোটিভ হতে পারে না, তারা তাদের সুপ্ত জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে প্রকৃতির অপার রহস্য ভেদ করতে পারে না। স্থবির চিন্তা চেতনা তাদেরকে প্রকৃতির সাথে লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করে না, বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার মাঝে তারা হয় অজ্ঞ ও অপারগ।

আগে ডায়রিয়ায় বছরে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করতো, মানুষ সারারাত ডায়রিয়ার জম ফিরানোর জন্যে গান বাজনা, নানান ধরনের ইবাদত বন্দেগী করতো, এখন মানুষ তা জয় করেছে, ডায়রিয়া এখন আর কোনো রোগ নয়। গুটি বসন্তে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেতো, আজ আর বর্তমান প্রজন্ম জানেই না, গুটিবসন্ত বলে কি ছিলো। মানুষ অজেয়কে জয় করেছে সাধনা ও গবেষণা দিয়ে। তার অসহায় প্রার্থনা বা লোকাচার দিয়ে নয়। ওগুলো একসময় তাদের উপায়হীন মনের সান্ত্বনা ছিলো। সাইক্লোন প্রতিরোধের জন্যে মিয়ানমারের বৌদ্ধরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ড্রাগন পূজা করতো, তাতে কোনো ফল হয়েছে কিনা জানা নেই। বরংচো এই পূজার উপর বিশ্বাস করে উপকূলীয় বহু লোক জানমাল হারিয়েছে। পবিত্র কাবা ঘরও বহুবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সুতরাং যার যার ধর্ম বিশ্বাসকে সমুন্নত রেখে আমরা জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি সচেতনতা দিয়ে প্রকৃতিকে জয় করি।

আরবের ধুধু মরুভূমি এখন মানুষের প্রচেষ্টায় সবুজে সতেজ হয়ে উঠছে। আমরা সবুজ বনভূমি উজাড় করে নানান মিথ লোকাচার ও ইবাদতে মজে আছি । এমন একদিন হয়তো আসবে, মানুষ যেখানে যখন চাইবে সেখানে তখন বৃষ্টিপাত ঘটাবে, যেখানে চাইবে না সেখানে ঝলমলে রোদ থাকবে । একটি চাঁদের আলোর তিথির জন্যে অপেক্ষা না করে কৃত্রিম চাঁদের আলোয় অবগাহন করা যাবে প্রতিটি রাত।

তাই বলছি, সচেতন হোন, বেশি করে গাছ লাগান। যে পরিমাণ কার্বনডাইঅক্সাইড পৃথিবীতে ছড়াচ্ছে তাতে আগামি পৃথিবী ভয়ানক হুমকির মুখে। গ্রিনহাউজ ইফেক্টের ফলে পৃথিবীর ওজন স্তরে ফাঁটল সৃষ্টি হচ্ছে, পৃথিবী ক্রমান্বয়ে তার স্বাভাবিক ভারসাম্য হারাচ্ছে। প্রতিনিয়ত গাড়ি, কলকারখানা, নৌযান ইঞ্জিন পৃথিবীর বাতাসে কার্বন নিঃসরণ করছে। পৃথিবীর উত্তাপ বৃদ্ধির কারনে এন্টার্কটিকা সাইবেরিয়ার বরফ গলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুনলাম জাপানের একটি বিমানবন্দর নাকি তলিয়ে যাচ্ছে সাগরে।

সুতরাং আসুন, অদৃষ্টবাদী না হয়ে পৃথিবীকে বাঁচাই, নয়তো এই মহাজগত থেকে মানবসভ্যতা তো দূরের কথা পৃথিবী নামের এই ছোট্ট গ্রহটিই হয়তো হারিয়ে যাবে কোনো এক অদৃশ্য অজানায়।

লেখকঃ
মাসুদ আলম বাবুল
অধ্যক্ষ, কবি ও সাহিত্যিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট