শেষ রমজানে একজন লোক আমার অফিসে এসে কিছু কাগজপত্র দেখাতে চাইলেন। আমি বললাম, মুখে বলেন, কাগজপত্র পরে দেখবো। তিনি জানালেন, সে একজন নব মুসলিম, তার আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।
জানতে চাইলাম, আপনার বাড়ি কোথায়?
তিনি জানালেন, নলছিটি।
আমি বললাম, নও মুসলিম সিরাজুল ইসলাম সিরাজীকে চিনেন?
বললেন, খুব ভালোকরে চিনি, আমাদের বাড়ির কাছে।
:ওনার দাওয়াতে কি মুসলমান হয়েছেন?
: না, আমি নিজেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছি।
:খুব ভালো, এখন তো শান্তিতে আছেন, সাহায্য চাচ্ছেন কেনো?
:ধর্ম ত্যাগ করায় তো স্বজাতির কেউ আর আমাকে কোনো সহযোগিতা করছে না।
:সিরাজী সাহেবের টাকা পয়সা কেমন?
: সে তো ওয়াজ মাহফিল করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।
:তাহলে তো তার কাছেই সাহায্য চাইতে পারেন?
লোকটি এবার খুব উত্তেজিত হয়ে বললেন, স্যার, অর কাছে আমি যাই না।
: কেনো?
: ও হইলো একটা লেবাসধারী টাউট, গলাবাজি কইর্রা এহন বহুত টাহার মালিক, কিন্তু কেউরে দুই টাহাও চাইলে দেবে না।
: কেনো দেবে? গলাবাজিটাওতো তার যোগ্যতা, তার পরিশ্রমলব্ধ টাকা আপনাকে দেবে কেনো? আপনিও তার মতো গলাবাজি করে টাকা কামাই করুন।
তিনি খুব সততার সাথে বললেন, না স্যার, একটা ভালো ধর্মের ছায়াতলে আসছি, ধর্ম বেইচ্যা টাকা রোজগার করতে চাইনা। আল্লায় যেভাবে রাখবে সেভাবেই থাকবো।
আমি স্মিত হেসে বললাম, তো সেই ভালো, সেভাবেই থাকুন। ইসলাম ধর্ম তো কাউকে ভিক্ষা করতে বলেনি, “নবীর শিক্ষা করো না ভিক্ষা, মেহনত করো সবে।” দু’টো হাত আছে, দু’টো পা আছে, সামর্থবান মানুষ, দেশে কাজের অভাব নেই কাজ করে খান।
তিনি মুখ ভার চলে গেলেন। তার বেশ কিছুদিন পরে ফেসবুকে এই ছবিটি পেলাম। জানিনা, সেই ব্যক্তিই এই ব্যক্তি কিনা! অতোটা খেয়াল করে চেহারা মুখস্ত করে রাখিনি, তবে কিছুটা সামঞ্জস্য মনে হচ্ছে বটে। যদি নাই হয় তো বুঝলাম ভিক্ষাবৃত্তির জন্যে আরো একজন নব মুসলিমের আবির্ভাব ঘটেছে এই বাংলায়।
লেখকঃ
মাসুদ আলম বাবুল
অধ্যক্ষ, কবি ও সাহিত্যিক